বছরের দ্বিতীয় এবং শেষ চন্দ্রগ্রহণ আজ, রবিবার। এই চন্দ্রগ্রহণ ভারতে দেখা যাবে। যখনই দেখা যাবে, তখন এর সূতক সময়কালও প্রযোজ্য হবে। যেখানে অনেক শুভ কাজ এবং আচার-অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ। সূতক সময়ের পরে, গ্রহণের সময় এমন একটি সময় আসবে যখন চন্দ্রগ্রহণ তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে। এই সময়টি হবে যখন মানুষ বিশ্বের অনেক জায়গায় পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখতে পাবে।
চন্দ্রগ্রহণ কখন শুরু হবে? (চন্দ্রগ্রহণ ২০২৫ ভারতের সময়)
ভারতীয় সময় অনুসারে, চন্দ্রগ্রহণ ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০.৫৮ মিনিটে শুরু হবে এবং শেষ হবে ০১.২৬ মিনিটে। চন্দ্রগ্রহণের মোট সময়কাল হবে ৩ ঘন্টা ২৮ মিনিট।
চন্দ্রগ্রহণ কখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে? (চন্দ্রগ্রহণ ২০২৫ সর্বোচ্চ সময়)
চন্দ্রগ্রহণের সর্বাধিক প্রভাব পড়বে রাত ১১:০১ থেকে ১২:২২ এর মধ্যে। এদিকে, গ্রহণের সর্বোচ্চ সময় হবে রাত ১১:৪২। এই সময়ে সারা বিশ্বের মানুষ পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখতে পাবে। চন্দ্রগ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে, জ্যোতিষীরা ভারতের মানুষকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। রাত ১১:০১ থেকে দুপুর ১২:২২ পর্যন্ত চাঁদ তার সবচেয়ে ভয়াবহ আকারে থাকাকালীন মানুষকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।
সূতক কাল শুরু হবে কোন সময়ে? (চন্দ্রগ্রহন ২০২৫ সুতক কাল সময়)
চন্দ্রগ্রহণের সূতককাল গ্রহণের ৯ ঘন্টা আগে থেকে শুরু হয়। এই চন্দ্রগ্রহণের সূতককাল এদিন দুপুর ১২.৫৭ মিনিটে শুরু হয়েছে। সূতককালে মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকবে। কোনও পুজো হবে না। ঈশ্বরের মূর্তি স্পর্শ করা এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়া, গর্ভবতী মহিলাদের বাড়িতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাদের ঘর থেকে বাইরে না যাওয়া, খাবার রান্না করা বা শাকসবজি কাটা ইত্যাদি কাজ এড়িয়ে চলতে হবে।
ব্লাড মুন কী? (ব্লাড মুন কী)
বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণটি কেবল পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণই হবে না, বরং এটি উজ্জ্বল লাল রঙেরও দেখাবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ভাষায় একে ব্লাড মুন বলা হয়। যখন পৃথিবীর ছায়া সূর্যের আলোকে আটকে দেয়, তখন বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত ধুলো, গ্যাস এবং অন্যান্য কণার কারণে লাল রশ্মি চাঁদে পৌঁছায়। এই কারণেই চাঁদ লাল রঙের দেখায়।
চন্দ্রগ্রহণের সময় কী করবেন? (চন্দ্রগ্রহণ ২০২৫ করণীয়):
১. মন্ত্র জপ এবং ধ্যান: চন্দ্রগ্রহণের সময়, দেব-দেবীর মূর্তি স্পর্শ করা হয় না বা পূজা করা হয় না। এমন পরিস্থিতিতে, কেবলমাত্র মন্ত্র সাধনা, ভজন এবং ধ্যানের মাধ্যমেই ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যায় এবং নেতিবাচক শক্তি এড়ানো যায়।
২. স্নান: চন্দ্রগ্রহণ শুরু হওয়ার আগে এবং শেষ হওয়ার পরে স্নান করুন। স্নানের জলে কিছুটা গঙ্গাজল মিশিয়ে নিন। এতে গ্রহণের নেতিবাচক রশ্মির প্রভাব দূর হবে।
৩. দান: গ্রহণ শেষ হওয়ার পর, দরিদ্র ও অভাবী ব্যক্তিদের খাদ্য, বস্ত্র বা দরকারী জিনিস দান করা শুভ। আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী চাল, দুধ, চিনি, ঘি, কাপড় এমনকি রূপাও দান করতে পারেন।
৪. তুলসী পাতা: চন্দ্রগ্রহণ এবং সূতক কাল শুরু হওয়ার আগে, ঘরে রাখা খাবারের জিনিসপত্রে তুলসী পাতা রাখুন। এটি গ্রহণের নেতিবাচক রশ্মি আপনার খাবার বা জলকে দূষিত করতে বাধা দেবে।
চন্দ্রগ্রহণের সময় কী করা উচিত নয়? (চন্দ্রগ্রহণ ২০২৫ করণীয়):
১. খাবার রান্না করা বা খাওয়া: সূতক সময় শুরু হওয়ার পরে খাবার রান্না করা বা খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
২. শুভ কাজ: সূতক কাল শুরু হওয়ার পর কোনও শুভ বা মঙ্গল কাজ করবেন না। কোনও নতুন কাজ শুরু করবেন না।
৩. মূর্তি স্পর্শ করা: সূতক কাল শুরু হওয়ার পরে, মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। পূজাও বন্ধ থাকে। এমন পরিস্থিতিতে, আপনার বাড়ির মন্দির বা সেখানে রাখা ঈশ্বরের মূর্তি স্পর্শ করবেন না।
৪. ধারালো জিনিস: ছুরি, কাঁচি, সূঁচ ইত্যাদি ধারালো বা সূঁচালো জিনিস ব্যবহার করবেন না। গর্ভবতী মহিলাদের এই বিষয়ে বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত।
৫. গর্ভবতী মহিলারা: গর্ভবতী মহিলাদের গ্রহণের সময় ঘরের বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। গ্রহণের সময় ঘরের জানালা এবং দরজা সঠিকভাবে বন্ধ করে রাখা ভালো।
৬. শ্মশান: গ্রহণের সময় শ্মশান বা নির্জন স্থানে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। মানসিকভাবে অস্থির, অসুস্থ বা বয়স্ক ব্যক্তিদেরও এই ধরনের স্থানে যাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।