scorecardresearch
 

Chandrayaan 3 Pragyan Rover & Vikram Lander: চাঁদে নেমে বিক্রম ও প্রজ্ঞান কী কী করবে? ১৪ দিনের পুরো প্ল্যান রইল

Chandrayaan-3 এর ল্যান্ডার অর্থাৎ বিক্রম এবং তার পেট থেকে চাঁদের পৃষ্ঠে বেরিয়ে আসা রোভার অর্থাৎ প্রজ্ঞান কাজ কী করবে? শুধুই কি অবতরণ করবে? শুধুমাত্র পৃষ্ঠের উপর ঘুরবে নাকি নতুন কিছু আবিষ্কার করা। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই মিশনের জন্য দুটি ডিভাই কী কাজ করবে।

Advertisement
চাঁদে ঠিক কী করবে Vikram Lander এবং Pragyan Rover? চাঁদে ঠিক কী করবে Vikram Lander এবং Pragyan Rover?


চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার, যাকে ISRO এবার তার অফিসিয়াল ব্রোশার বা প্রেস রিলিজে বিক্রম ল্যান্ডার বলছে না,  কিন্তু সাধারণ কথোপকথনে বিজ্ঞানীরা একে বলছেন বিক্রম। প্রজ্ঞান রোভার এর পেটের ভিতরে রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে। তার ভিতরে প্রজ্ঞান  রাখা আছে। 

প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক প্রজ্ঞান রোভার কি কি কাজ করবে। প্রজ্ঞান রোভারে দুটি পেলোড রয়েছে। প্রথমটি হল লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ (LIBS)। এটি চন্দ্র পৃষ্ঠে উপস্থিত রাসায়নিকের পরিমাণ এবং গুণমান অধ্যয়ন করবে। খনিজের সন্ধানও করবে।

এছাড়াও, প্রজ্ঞানের দ্বিতীয় পেলোড হল আলফা পার্টিকেল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (APXS)। এটি এলিমেন্ট কম্পোজিশন স্টাডি করবে,  যেমন- ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, টিন এবং আয়রন।  ল্যান্ডিং সাইটের চারপাশে চন্দ্র পৃষ্ঠে অভিযান চালাবে প্রজ্ঞান।

আরও পড়ুন

এবার আসা যাক বিক্রম ল্যান্ডারের কাজ নিয়ে। বিক্রম ল্যান্ডারে চারটি পেলোড রয়েছে। প্রথম রম্ভা (RAMBHA)। এটি চন্দ্র পৃষ্ঠে সূর্য থেকে আসা প্লাজমা কণার ঘনত্ব, পরিমাণ এবং তারতম্য পরীক্ষা করবে। দ্বিতীয় চাস্টে (ChaSTE)। এটি চাঁদের পৃষ্ঠের তাপ পরীক্ষা করবে। তৃতীয়টি হল ILSA। এটি অবতরণ স্থানের চারপাশে ভূমিকম্পের কার্যকলাপ তদন্ত করবে। চতুর্থটি লেজার রেট্রোরেফ্লেক্টর অ্যারে (LRA)। এটি চাঁদের গতিশীলতা বোঝার চেষ্টা করবে।

 

তাদের ল্যান্ডিং  কেমন হবে? 

  • ২৫ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে চাঁদে অবতরণের যাত্রা শুরু করবে বিক্রম ল্যান্ডার। পরবর্তী পর্যায়ে পৌঁছাতে প্রায়১১.৫ মিনিট সময় লাগবে। অর্থাৎ ৭.৪ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত।
  •  এটির গতি হবে ৩৫৮ মিটার প্রতি সেকেন্ডে যতক্ষণ না এটি ৭.৪ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায়। পরবর্তী স্টপ হবে ৬.৮ কিলোমিটার। 
  • ৬.৮ কিমি উচ্চতায়, গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩৩৬ মিটার কমে যাবে। পরবর্তী স্তর হবে ৮০০ মিটার। 
  • ৮০০ মিটার উচ্চতায়, ল্যান্ডারের সেন্সরগুলি চাঁদের পৃষ্ঠে লেজার রশ্মি রেখে অবতরণের জন্য সঠিক জায়গা খুঁজে পাবে।
  • ১৫০ মিটার উচ্চতায় ল্যান্ডারের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৬০ মিটার হবে। মানে ৮০০ থেকে ১৫০ মিটার উচ্চতার মধ্যে। 
  • ৬০ মিটার উচ্চতায় ল্যান্ডারের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৪০ মিটার হবে। মানে ১৫০ থেকে ৬০ মিটার উচ্চতার মধ্যে। 
  • ১০ মিটার উচ্চতায়, ল্যান্ডারের গতি হবে১০ মিটার প্রতি সেকেন্ডে।
  •  চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণের সময়, অর্থাৎ সফট ল্যান্ডিংয়ের  জন্য, ল্যান্ডারটির গতিবেগ হবে প্রতি সেকেন্ডে ১.৬৮ মিটার।

অবতরণের প্রায়২০ মিনিট পরে প্রজ্ঞান বেরিয়ে আসবে 
ল্যান্ডারের পেটে রাখা হয়েছে প্রজ্ঞান রোভার। যা অবতরণের প্রায় ১৫ থেকে ৩০  মিনিট পর দরজা খুললেই বেরিয়ে আসবে।  বিক্রম ল্যান্ডারের আকার ৬.৫৬ ফুট x ৬.৫৬ ফুট x ৩.৮২ ফুট। এর চার পা আছে। এর ওজন ১৭৪৯.৮৬ কেজি। গতবারের তুলনায় এবার ল্যান্ডারটিকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে, আরও সেন্সর রয়েছে। যাতে চন্দ্রযান-২-এর মতো দুর্ঘটনা না ঘটে। এবার বিক্রম ল্যান্ডারে কিছু বিশেষ প্রযুক্তি বসানো হয়েছে। যেমন লেজার এবং আরএফ ভিত্তিক অল্টিমিটার, লেজার ডপলার ভেলোসিটোমিটার এবং ল্যান্ডারের অনুভূমিক বেগ ক্যামেরা, লেজার গাইরো ভিত্তিক ইনর্শিয়াল রেফারেন্সিং এবং অ্যাক্সিলোমিটার প্যাকেজ।

Advertisement

এভাবেই যেকোনো ধরনের বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করবে ল্যান্ডার 
এছাড়াও  ৮০০ নিউটন থ্রোটলেবল লিকুইড ইঞ্জিন ইনস্টল করা আছে। ৫৮ নিউটন থ্রাস্ট উচ্চতা থ্রাস্টার এবং থ্রোটলেবল ইঞ্জিন নিয়ন্ত্রণ ইলেকট্রনিক্স। এ ছাড়া ন্যাভিগেশন, গাইডেন্স অ্যান্ড কন্ট্রোল, হ্যাজার্ড ডিটেকশন অ্যান্ড এভয়েডেন্স ক্যামেরা এবং ল্যান্ডিং লেগ মেকানিজম সংক্রান্ত আধুনিক সফটওয়্যার। এগুলি এমন কৌশল যা ল্যান্ডারটিকে নিরাপদে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করাবে।

বিক্রম ল্যান্ডারের সমন্বিত সেন্সর এবং নেভিগেশন পারফরম্যান্স পরীক্ষা করার জন্য, তাকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যাকে বলা হয় ইন্টিগ্রেটেড কোল্ড টেস্ট। তারপর ইন্টিগ্রেটেড  হট টেস্ট  হয়েছে। এটি একটি লুপ কর্মক্ষমতা পরীক্ষা।  যেখানে টাওয়ার ক্রেন থেকে সেন্সর এবং এনজিসি নামতে দেখা গেছে। বিক্রম ল্যান্ডারের পায়ের মেকানিজম পারফরম্যান্স পরীক্ষা করার জন্য এটি লুনার সিমুল্যান্ট টেস্ট ব্যাটে বেশ কয়েকবার নামানো হয়েছিল। চন্দ্র পৃষ্ঠে অবতরণের পর, ল্যান্ডারটি ১৪ দিন কাজ করবে। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আরও দিন কাজ হতে পারে। 

 

এভাবেই পৃথিবীর সঙ্গে  যোগাযোগ তৈরি হবে 
চন্দ্রপৃষ্ঠে প্রজ্ঞান রোভার থেকে বার্তা নেবে বিক্রম ল্যান্ডার। বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান ডিপ স্পেস নেটওয়ার্কে (IDSN) পাঠাবে। প্রয়োজনে এই কাজে চন্দ্রযান-২-এর প্রপালশন মডিউল এবং অরবিটারের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। যতদূর প্রজ্ঞা রোভার সম্পর্কে জানা যাচ্ছে, সে কেবল বিক্রমের সঙ্গে  কথা বলতে পারবে।

Advertisement