
ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা পরিবেশে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে চিনের পদক্ষেপ। পাকিস্তান নৌবাহিনীকে মোট ৮টি আধুনিক হ্যাঙ্গর-শ্রেণীর সাবমেরিন সরবরাহ করছে বেজিং। এয়ার ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোপালশন (AIP) প্রযুক্তিসম্পন্ন এই সাবমেরিনগুলি দীর্ঘ সময় জলের নীচে গোপনে চলাচল করতে সক্ষম। প্রথম সাবমেরিনটি ২০২৬ সালে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগ দেবে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে আটটি সাবমেরিনই ডেলিভারি সম্পূর্ণ হবে।
চুক্তির মূল্য প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার, যা পাকিস্তানের সামুদ্রিক শক্তিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে এবং আরব সাগরে ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। তবে সামগ্রিক সক্ষমতার বিচারে ভারত অনেক এগিয়ে।
পাকিস্তানের নতুন সাবমেরিন কতটা বিপজ্জনক?
হ্যাঙ্গর-শ্রেণীর সাবমেরিনগুলো চিনের Type 039A ‘Yuan’ শ্রেণীর রফতানি সংস্করণ। বৈশিষ্ট্য-
ওজন: প্রায় ২৮০০ টন
দৈর্ঘ্য: ৭৭ মিটার
গতি: জলে ১৮ নট, জলের নীচে ২০ নট
AIP সিস্টেম: পৃষ্ঠে না উঠে ২-৩ সপ্তাহ জলের নীচে লুকিয়ে থাকতে পারে
স্টেলথ: শব্দ অত্যন্ত কম, শনাক্ত করা কঠিন
অস্ত্রসজ্জা:
৬টি টর্পেডো টিউব
জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (YJ-18/YJ-82)
টর্পেডো
৩ পারমাণবিক সক্ষম ক্রুজ মিসাইল
এই ক্ষমতাগুলির ফলে পাকিস্তানের পুরনো আগোস্তা শ্রেণীর সাবমেরিনের তুলনায় যুদ্ধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যাবে।
২০২৫ সালে পাকিস্তান নৌবাহিনীর শক্তি
মোট জাহাজ: ১২০–১৩০
বর্তমান সাবমেরিন: ৮–৯
নতুন হ্যাঙ্গর যুক্ত হলে: ১৬–১৭
ফ্রিগেট: ১০–১২
কর্ভেট: ৪–৬
ডেস্ট্রয়ার/এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার: নেই
পাকিস্তান নৌবাহিনী মূলত উপকূল রক্ষা অভিযানেই সীমাবদ্ধ। গভীর সমুদ্রে অভিযান চালানোর সক্ষমতা সীমিত।
ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি: চার থেকে পাঁচ গুণ বড়। ভারতের নৌবাহিনী বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শক্তি
বিমানবাহী রণতরী - ২টি, আইএনএস বিক্রান্ত, আইএনএস বিক্রমাদিত্য, সাবমেরিন - ১৯টি, পারমাণবিক সাবমেরিন: ৩টি (আরিহন্ত-শ্রেণী ও রাশিয়ার আকুলা ক্লাস), স্ট্যান্ডার্ড ডুবোজাহাজ: ১৬–১৭, কালভারি ক্লাস (স্করপিন), সিন্ধুঘোষ ক্লাস (কিলো), শিশুমার ক্লাস (জার্মান), ডেস্ট্রয়ার - ১৩টি, কলকাতা, বিশাখাপত্তনম শ্রেণীসহ-সবই ব্রহ্মোস-সজ্জিত।, ফ্রিগেট – ১৪–১৭টি, শিবালিক, তালওয়ার, আগত নীলগিরি শ্রেণী।, কর্ভেট - ২০–২৫টি
ভারত কতটা প্রস্তুত?
পাকিস্তানের নতুন AIP সাবমেরিন উদ্বেগের কারণ হলেও, ভারতের পারমাণবিক সাবমেরিন বহর দীর্ঘমেয়াদে কৌশলগতভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী। ভারতের নৌবাহিনী সমুদ্রের গভীর থেকে আকাশপথ-সব দিকেই প্রচণ্ড আধিপত্য বজায় রাখে। প্রকল্প ৭৫-আই-এর অধীনে ভারত আরও ৬টি আধুনিক AIP সাবমেরিন তৈরি করছে।