আজ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনের নতুন পর্ব শুরু হল। দিল্লির যন্তর মন্তরে প্রতিবাদ করছেন তারা , যা কৃষকদের সংসদের মতো হবে। সিংঘু, টিকরি ও গাজীপুর সীমান্ত থেকে বাস ভর্তি করে কৃষকরা যন্তর মন্তরে আসছেন। কৃষকদের সমর্থনে এদিন সংসদে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে দলীয় সাংসদদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শিরোমণি অকালি দলের সাংসদরাও সংসদ চত্বরে প্রতিবাদে সামিল হলেন।
Farmers gather to board the buses at Singhu (Delhi-Haryana) border, ahead of protest against three farm laws at Jantar Mantar in Delhi pic.twitter.com/S4JFHt6lv4
— ANI (@ANI) July 22, 2021
বিক্ষোভকারীদের সাথে রয়েছেন যোগেন্দ্র যাদব। তিনি বলেন যে, পুলিশ আবারও বাসগুলি চেক করছে, যার কারণে কৃষকরা যন্তর মন্তরে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। অন্য কৃষক নেতারা দাবি করছেন যে, দিল্লি পুলিশ এবং সরকার বারবার তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরছেন, য কারে কৃষকদের হয়রানি হচ্ছে। এদিকে কেন্দ্র কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে তৈরি বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। মন্ত্রীর দাবি, মোদী সরকার কৃষকদের পক্ষে। আমরা আগেও কথা বলেছি, এখনও তাই চাই।
দুর্গ-র চেহারা নিয়েছে রাজধানী
কৃষকদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে টিকরি, সিংঘু, গাজীপুর সীমান্ত এবং দিল্লির যন্তর মন্তরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে । বিক্ষোভ শুরুর আগেই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কৃষকরা দিল্লিতে পৌঁছতে শুরু করেছেন। কৃষকদের বিশাল বিশালবাসে করে আসছেন। কৃষকরা এখানে সকাল ১১ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সংসদ বসাচ্ছেন।
বাদল অধিবেশনকে টার্গেট
বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর সীমান্ত থেকে কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত সিংঘু সীমান্তের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তিনি বলেন , 'যতক্ষণ সংসদ চলবে,ততক্ষণ আমরা এখানেই থাকব' । রাকেশ টিকায়েতেক মতে, প্রথম বাসগুলি সিংঘু বর্ডারে যাবে। রাকেশ টিকায়েত জানান, গত আট মাস ধরে আমাদের লড়াই চলছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের সামনে আমাদের বক্তব্য রাখতে চাই। কৃষক নেতা বলেন যে যতক্ষণ সংসদ অধিবেশন চলবে ততক্ষণ আমরা আমাদের কৃষক সংসদ নিজেরাই যন্তর মন্তরে করবো।
কৃষক নেতা প্রেম সিং ভাঙ্গু বলেছেন যে আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য উত্তর প্রদেশ। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে যার শুরু হবে। আমরা বিজেপিকে আলাদা করতে চাই। তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা ছাড়া উপায় নেই।
তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী দিল্লি কার্যত দুর্গে পরিণত হয়েছে ৷ গতকাল রাত থেকেই যন্তর মন্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়াকড়ি করেছিল দিল্লি পুলিশ ৷ আজ সকাল থেকেই রাজধানীর প্রবেশ পথ সিংঘু সীমানায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে যন্তর মন্তরে কৃষকদের।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব সহ উত্তর ভারত তথা দেশের প্রতিটি প্রান্তে, কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়েছে ৷ যাকে ঘিরে চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্র্যাক্টর ব়্যালিকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল রাজধানী দিল্লি ৷ জাতীয় রাজধানীতে প্রবেশের অন্যতম পথ সিংঘু সীমানায় কৃষকরা অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন ৷ যা গত অক্টোবর থেকে চলে আসছে ৷ তিনটি নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ-আন্দোলনকে আজ আরও জোরদার করতে চাইছে তিরিশটিরও বেশি কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ৷ সেই কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ যন্তর মন্তরে শর্ত সাপেক্ষে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সামিল হচ্ছে কৃষক সংগঠনগুলি ৷ যেখানে দিল্লি পুলিশের তরফে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার তরফে ২০০ জনের বেশি আন্দোলনকারী যন্তর মন্তরের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না ৷ আর কিষাণ মজদুর সংঘের তরফে ৬ জন সেখানে থাকতে পারবেন ৷ বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এই অবস্থান বিক্ষোভ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে করতে হবে বলে অনুমতিপত্রে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ প্রশাসন ৷