হরিয়ানার রোহতক শহরে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামনে এসেছে। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ সাম্পলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে একটি পরিত্যক্ত নীল স্যুটকেস পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হওয়ায় তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে স্যুটকেসটি খুলতেই হতবাক হয়ে যায়—ভেতরে এক তরুণীর মৃতদেহ পড়ে ছিল।
হাতে মেহেদী, গলায় স্কার্ফ, দেহে নির্যাতনের চিহ্ন
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, মৃত তরুণীর হাতে মেহেদী লাগানো ছিল, গলায় কালো স্কার্ফ এবং গায়ে সাদা টপ ও লাল প্যান্ট ছিল। পুলিশ ধারণা করছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং তারপর প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে দেহটি স্যুটকেসে ভরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল ঘটনাস্থলে এসে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
পরিচয় প্রকাশ্যে, নিহত তরুণী কংগ্রেস নেত্রী
দুপুরের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃতদেহের ছবি ভাইরাল হলে, রোহতকের বিধায়ক বিবি বাত্রা নিহত তরুণীকে শনাক্ত করেন। তিনি জানান, ওই তরুণীর নাম হিমানি নারওয়াল, যিনি কংগ্রেস দলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন এবং রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো যাত্রা'য় অংশ নিয়েছিলেন।
পরিবারের উপর নেমে আসা একের পর এক দুর্যোগ
হিমানির পরিবার নিয়েও উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, কয়েক বছর আগে তার বাবা আত্মহত্যা করেছিলেন এবং তার ভাইকেও খুন করা হয়েছিল। একের পর এক পারিবারিক ট্র্যাজেডির পর এবার নিজেও হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন হিমানি।
বিচারের দাবিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি
হিমানির নৃশংস হত্যাকাণ্ডে হরিয়ানার রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। বিধায়ক বিবি বাত্রা বলেন, "এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, অপরাধীরা পুলিশের ভয় পাচ্ছে না।" একই সঙ্গে, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা উচ্চ পর্যায়ের এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশি তদন্তে কী সামনে আসছে?
সাম্পলা থানার ইনচার্জ বিজেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড বলেই মনে করা হচ্ছে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।