করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডাক্তার, নার্সদের মৃত্যুর খবর সামনে আসছে। এই মারণ ভাইরাসের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরাও। করোনায় দেশজুড়ে এখনও পর্যন্ত ৩০০-রও বেশি সংবাদকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ প্রাণ কেড়েছে অসংখ্যা মানুষের। করোনার সংক্রমণ রুখতে লকডাউন, কারফিউ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু, তার মধ্যেও পেশার তাগিদে সাংবাদিকদের অফিস যেতে হয়েছে, মাঠে নেমে কাজ করতে হয়েছে। অথচ তাঁদের ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারের (যদিও একাধিক রাজ্য ইতিমধ্যেই সাংবাদিকদের ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার বলে ঘোষণা করেছে) তকমা দেওয়া হয়নি। ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রেও সাংবাদিকদের কথা সেভাবে ভাবেনি সরকার। যার পরিণাম, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ৩০০ জন সাংবাদিক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ সবথেকে বেশি প্রাণ কেড়েছে সংবাদমাধ্যম কর্মীদের। পরিসংখ্যান বলছে, গত এপ্রিল মাসে প্রতিদিন গড়ে ৩ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।
মে মাসে বেড়েছে মৃত্যু
পরিসংখ্যান বলছে চলতি মে মাসে প্রতিদিন গড়ে ৪ সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে ৫৬ জন সাংবাদিক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে জনজীবনে। আর তার প্রভাব পড়েছে সংবাদকর্মীদের উপরও। ১ এপ্রিল ২০২১ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে ১৭১ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।
আজতক-ইন্ডিয়া টুডের রেকর্ডে এমন ৮২ জন সাংবাদিকের মৃ্ত্যুর তথ্য হাতে এসেছে যেগুলির ভেরিফিকেশন হয়নি। তবে নেটওয়ার্ক অফ উইমেন ইন মিডিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে ৩০০-রও বেশি সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। গুগল ডকুমেন্ট ও ট্যুইটারে সেই তথ্যও ভাইরাল হয়েছে।
ইনস্টিটিউট অফ পারসেপশন স্টাডিজের নির্দেশক আজতক-ইন্ডিয়া টুডে'কে জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৩০০-রও বেশি সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
তেলাঙ্গানা ও উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু সবথেকে বেশি
দক্ষিণের রাজ্য তেলাঙ্গানায় সবথেকে বেশি সংখ্যক সাংবাদিক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। সংখ্যাটা ৩৯। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশে ৩৭, দিল্লিতে ৩০, মহারাষ্ট্রে ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক সাংবাদিকদের মৃত্যুর সংখ্যা সবথেকে বেশি। প্রায় ৩১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়স এমন সাংবাদিকদের মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশ।
পরিসংখ্যান থেকে এও জানা যাচ্ছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে অধিকাংশ সাংবাদিকরা কাজ করতেন ছোটো শহরে।