আচমকা কোভিড সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে নতুন করে উদ্বেগ। এই মুহূর্তে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রনের চারটি উপপ্রজাতি। নতুন করে হাই অ্যালার্টে হাসপাতালগুলি। ভিড় বাড়ছে RT-PCR টেস্টের। দীর্ঘদিন মাস্কমুক্ত পৃথিবীতে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ কি আবার হাতছাড়া হতে চলেছে? এই আতঙ্কই যেন গ্রাস করছে সাধারণ মানুষকে। তবে অভয় দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। জানিয়েছেন, সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই চরিত্র ধারণ করেছে কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্টগুলি। ফলে উদ্বেগের তেমন কোনও কারণ নেই। উপসর্গ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে টেস্ট করানো এবং বেসিক কোভিড প্রোটোকল মেনে চলাই এখন সকলের কর্তব্য হওয়া উচিত।
মঙ্গলবারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আপডেট বলছে, দেশে এই মুহূর্তে কোভিড অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ১০১০। ১৯ মে থেকে ২৬ মে-র মধ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫২ জন। সংক্রমণের হার সবথেকে বেশি কেরলে। ৪৩০ জন করোনা পজিটিভ সেখানে। মহারাষ্ট্র ২০৯, দিল্লি ১০৪, গুজরাত ৮৩ এবং তামিলনাড়ুতে ৬৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় এখনও পর্যন্ত দেশে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাতেও ঢুকে পড়েছে করোনাভাইরাস। এ রাজ্যে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ১২।
করোনার টেস্ট আগের থেকে বেড়েছে। ফলে রোগী ধরা পড়ছে বেশি। পরীক্ষা করা যেহেতু আগের তুলনায় এখন অনেক সহজ সেই কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি হলেও সাধারণ মানুষ টেস্ট করাচ্ছে। তাতে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে। আচমকা করোনার বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে এই কারণই ব্যাখ্যা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন যে করোনা ছড়াচ্ছে তা মারাত্মক নয় বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী পঙ্কজ সিং জানান, সাধারণ ভাইরাল ফিভারের মতোই উপসর্গ দেখা দিচ্ছে করোনায় আক্রান্তদের। সাধারণ মানুষের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলেই জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রীর কথায়, 'হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত বেড প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় ওষুধের বন্দোবস্ত রাখতে বলা হয়েছে। এগুলি সাধারণ ব্যবস্থা, এর জন্য উদ্বেগ ছড়ানোর কোনও কারণ নেই।'
কোভিড-১৯ NB.1.8.1 ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ১ এবং LF.7 ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত ৪ জনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে দেশে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইন্ডিয়ান SARS-COV-2 জিনোমিক্স কসোর্টিয়াম সংগঠন। এই সংস্থা ভাইরাসের জিনগত মিউটেশন নিয়ে পরীক্ষা চালায়। তবে এই দুই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এখনই উদ্বেগের কোনও কারণ দেখছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। LF.7 এবং NB.1.8.1 ভ্যারিয়েন্ট দু'টিই যে বর্তমানে চিন তথা এশিয়ার বেশ কিছু দেশে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য দায়ী, তা একপ্রকার নিশ্চিত। তবে ভারতে এখনও পর্যন্ত নতুন করে কোভিড আকান্তদের বেশিরভাগের শরীরেই থাবা বসিয়েছে JN.1 ভ্যারিয়েন্ট। ভারতের নানা রাজ্যের ল্যাবে পরীক্ষিত কোভিড রোগীদের মধ্যে ৫৩ শতাংশের নমুনায় JN.1 ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মিলেছে। পাশাপাশি BA.2 ভ্যারিয়ান্ট পাওয়া গিয়েছে ২৬ শতাংশের নমুনায়। অন্যান্য ওমিক্রমের সাব ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ২০ শতাংশ।