দৈনিক করোনা টিকাকরণে রেকর্ড গড়ল দেশ। আজ, সমবার (২১ জুন) ৮১ লক্ষ মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনার প্রশংসা করেছেন।
দিন কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, ২১ জুন থেকে দেশের সবাইকে নিখরচায় করোনার টিকা দেওয়া হবে। টিকা উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ কিনবে কেন্দ্র। আর ২৫ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতাল। যাঁরা টিকা কিনে নিতে চান, তাঁরা সেখান থেকে কিনতে পারবেন।
Today’s record-breaking vaccination numbers are gladdening. The vaccine remains our strongest weapon to fight COVID-19. Congratulations to those who got vaccinated and kudos to all the front-line warriors working hard to ensure so many citizens got the vaccine.
— Narendra Modi (@narendramodi) June 21, 2021
Well done India!
এই ঘোষণার পর তৃণমূল, সিপিআইএম, কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দলগুলি কটাক্ষ করেছিল। তাদের দাবি, অনেক আগেই এই ঘোষণা করে দেওয়া দরকার ছিল। কেন্দ্র সময় নষ্ট করেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, তিনি জানান, দেশের কোনও রাজ্যকে কোনও খরচ করতে হবে না। গরিব, নিম্নবর্গ হোক বা উচ্চ বর্গ। তবে কেউ কিনতে চাইলে কিনতে পারেন। এই ২ সপ্তাহে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি মিলিয়ে নির্দেশিকা তৈরি করবে। ২ সপ্তাহ পরে ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। ১৮ বছরের ওপরে সবার জন্য নিখরচায় টিকা দেবে। উৎপাদনকারীদের থেকে ৭৫ শতাংশ কিনে রাজ্যকে দেবে কেন্দ্র। কোনও খরচ করতে হবে না রাজ্যকে।
তিনি বলেন, কেউ যদি বিনা খরচে টিকা নিতে না চান, বেসরকারি জায়গায় লাগাতে চান, দেশে তৈরি টিকার ২৫ শতাংশ টিকা যাতে তারা কিনতে পরারে, সেই ব্যবস্থা রয়েছে। টিকার দামের বাইরে দেড়শো টাকা সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে। এটা দেখবে রাজ্য।
তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের মতো ভারতও সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিবারের সঙ্গে আমাদের সমবেদনা রয়েছে। গত ১০০ বছরে এটা সবথেকে বড় অতিমারী। এমন জিনিস আধুনিক বিশ্ব দেখেনি। কোভিড হাসপতাল, আইসিইউ শয্য়া বাড়ানো, দেশে ভেন্টিলেটর, পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।
তিনি বলেন, গত দেড় বছরে এক নুতন স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। আগে এমন অক্সিজেনের চাহিদা হয়নি। সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। রেল, নৌসেনা, বিমান কাজে লাগানো হয়েছে। অক্সিজেনের উৎপাদন ১০ গুণ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি জানান, কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই বিধি মানা। টিকা আমাদের সুরক্ষা কবজের মতো। চাহিদার তুলনায় উৎপাদনকারী দেশ আর সংস্থা অনেকম। তা হাতে গোনা। ভারতের মতো দেশে করোনার টিকা তৈরি না-হলে কী হত ভাবুন। আগে বিদেশ থেকে টিকা আনতে দশক লেগে যেত। সেখানে টিকাকরণের কাজ শেষ হলে গেলেও আমাদের দেশে সেই কাজ শুরুও হত না।
তিনি জানান, ২০১৪ সালে দেশের সেবা করার সুযোগ পাই। দেশে টিকাকরণের আওতায় ছিলেন ৬০ শতাংশের মতো। আমাদের চিন্তা ছিল। যে গতিতে সেই কাজ চলছি, তাতে সবাইকে টিকা দিতে ৪০ বছর লেগে যেত। তাই চালু করি মিশন ইন্দ্রধনুষ। আর তার ৬-৭ বছরের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, আমরা শিশুদের প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচাতে টিকাকরণের ব্যবস্থা করেছি। দেশের শিশু, গরিব, গরিবের ওই শিশুদের চিন্তা ছিল। যারা কখনই টিকা পেত না। ১০০ শতাংশের দিকে এগোচ্ছিলাম।
তিনি জানান, আর তখন করোনা আমাদের ঘিরে নেয়। ভারত কী করে বাঁচাবে। যখন নীতি স্পষ্ট, উদ্দেশ্যে সাফ হয়, তখন ভারত দুটো টিকা এনেছে। দেশ, দেশের বিজ্ঞানীরা দেখিয়ে দিলেন ভারত কারও থেকে পিছিয়ে নেই। দেশে ২৩ কোটির বেশি টিকার ডোজ দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
তিনি জানান, আমাদের এখানে বলা হয় বিশ্বাসেই সিদ্ধি। যখন বিশ্বাস থাকে তখন সাফল্য পাই। আমাদের বিশ্বাস ছিল, দেশের বিজ্ঞানীরা কম সময়ে টিকা বাননিয়ে ফেলবেন। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে করোনা টাস্ক ফোর্স বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি জানান, টিকা বানানোর কাজে সাহায্য, গবেষণার জন্য অর্থ, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সরকার চলেছে। তাঁদের হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। টিকার সরবরাহ আরও বাড়বে। দেশে ৭ সংস্থা টিকার তৈরি করছে। আরও ৩টের ট্রায়াল চলছে। আরও বেশি টিকা পাওয়ার জন্য বিদেশ থেকে টিকা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, শিশুদের নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। নাকে দেওয়ার টিকা আনার পরিকল্পনাও রয়েছে। এই টিকার সাফল্য পেলে টিকাকরণের আরও গতি আসবে। এত কম সময়ে মানবতার জন্য বড় পাওনা