উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ জেলায় এক নাবালিকা দলিত কিশোরীকে অপহরণ, নির্যাতন এবং দুমাস ধরে গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, ওই নাবালিকার হাতে খোদাই করা ‘ওম’ ট্যাটুকে অ্যাসিড দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় চারজন অভিযুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র একজনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ।
নাবালিকাকে অপহরণ ও দীর্ঘদিন আটকে রাখার অভিযোগ
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২ জানুয়ারি ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরী যখন দর্জির কাছে যাচ্ছিল, তখন অভিযুক্তরা তাকে অপহরণ করে। অভিযুক্তরা হল সালমান, জুবায়ের, রশিদ ও আরিফ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা কিশোরীকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়, অজ্ঞান করে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখে এবং দুই মাস ধরে একাধিকবার গণধর্ষণ করে।
‘ওম’ ট্যাটু পোড়ানো, জোর করে মাংস খাওয়ানোর অভিযোগ
পরিবারের আরও অভিযোগ, অভিযুক্তরা মেয়েটির হাতে থাকা ‘ওম’ ট্যাটুকে অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং তাকে জোর করে মাংস খেতে বাধ্য করে। এ ছাড়াও, টানা দুই মাস ধরে চলতে থাকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার।
অবশেষে পালিয়ে এসে পুলিশের দ্বারস্থ পরিবার
গত ২ মার্চ কোনওভাবে পালিয়ে বাড়ি ফিরে আসে নির্যাতিতা। এরপর তার পরিবার দ্রুত থানায় অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে ভগতপুর থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা, যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা (পকসো) আইন এবং তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (নৃশংসতা প্রতিরোধ) আইনে মামলা রুজু করা হয়।
একজন গ্রেফতার, বাকিরা পলাতক
পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কুনওয়ার আকাশ সিং জানিয়েছেন, তদন্ত শুরু হওয়ার পর অভিযুক্তদের মধ্যে সালমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি তিন অভিযুক্ত এখনও পলাতক, তবে তাদের খুঁজে বের করতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
পরিবারকে হুমকি, মামলা প্রত্যাহারের চাপ
এদিকে, নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, তারা এখন লাগাতার হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য তাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা।
এই নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও দলিত অধিকার রক্ষা সংগঠন। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সমাজের একাংশ।