গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড। প্রবল বর্ষণ, মেঘভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৮ জন। আবহাওয়া দফতর দুই রাজ্যের একাধিক জেলায় কমলা ও হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। উত্তর ভারতের এই হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চলে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যস্ত পরিকাঠামোর ছবিই এখন প্রতিদিনের বাস্তব।
হিমাচলে এখন পর্যন্ত ১৪টি মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ও ৩টি আকস্মিক বন্যার খবর মিলেছে। শুধু মান্ডি জেলাতেই মারা গিয়েছেন ১৪ জন, নিখোঁজ ৩০। মোট মৃতের সংখ্যা মরসুমের শুরু থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮। মান্ডি ছাড়াও, উনা, বিলাসপুর, সোলান ও সিরমৌর জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডিতে এখনো ১৮৩টি রাস্তা বন্ধ, রাজ্যজুড়ে বন্ধ ২৪৩টি রাস্তা।
চাম্বার চুরাহ এলাকায় ৫০ বিঘার বেশি কৃষিজমি ধ্বংস হয়েছে। একটি নতুন সেতু ভেসে গিয়ে চারটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। নদী উপচে পড়েছে, গাছ ভেঙে পড়েছে, বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু জানিয়েছেন, ক্ষতির পরিমাণ ৭০০ কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
উত্তরাখণ্ডে ১ জুন ২০২৫ থেকে এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে মারা গিয়েছেন ২১ জন, আহত ১১, নিখোঁজ ৯ জন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলি হল উত্তরকাশী, চামোলি, রুদ্রপ্রয়াগ ও দেরাদুন। এসব অঞ্চলে ভূমিধসের উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চারধাম যাত্রা শুরুর পর থেকে মৃত্যু হয়েছে ১৬৯ জন তীর্থযাত্রীর, যার মধ্যে কেদারনাথে ৭৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
বর্তমানে ৫০টি রাস্তা বন্ধ, ক্ষতিগ্রস্ত ১৩৪টি বাড়ি, ধ্বংস হয়েছে ১০টি সম্পূর্ণ বাড়ি। চামোলিতে ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বদ্রীনাথ জাতীয় সড়ক। স্কুল বন্ধ, সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের বাড়ির বাইরে না বেরনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।