Swami Chaitanyananda Saraswati news: ভুয়ো নম্বর প্লেট সহ বিলাসবহুল গাড়ি। একাধিক মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী। তিনটি বাক্য একসঙ্গে যাচ্ছে না, তাই না? কিন্তু এমনই অভাবনীয় ঘটনায় তোলপাড় দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ এলাকার এক আশ্রম। আশ্রমের মহারাজ চৈতন্যনন্দ সরস্বতীর বিরুদ্ধে একাধিক মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই ১৫ জনেরও বেশি মহিলা তাঁর নামে অফিসিয়ালি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরিস্থিতি তপ্ত হয়ে উঠতেই শৃঙ্গেরী মঠের তরফে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক। শেষবার আগ্রায় তাঁর লোকেশন ট্র্যাক করা গিয়েছিল বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
বহুদিন ধরেই একাধিক অভিযোগ
স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী আগে পার্থসারথী নামেও পরিচিত ছিলেন। এর আগেও একাধিক অপরাধমূলক অভিযোগে তাঁর নাম জড়িয়েছিল। ২০০৯ সালে ডিফেন্স কলোনি এলাকায় তাঁরই বিরুদ্ধে প্রতারণা ও শ্লীলতাহানির মামলা হয়েছিল। আবার ২০১৬ সালে বসন্ত কুঞ্জেরই এক মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
নতুন মামলার তদন্ত
এই ঘটনায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ চৈতন্যনন্দ স্বামীর বিলাসবহুল ভলভো S60 গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে। লাল টুকটুকে এই গাড়ির বাজার দর প্রায় ৫০-৬০ লক্ষ টাকা। শুধু তাই নয়, সেই গাড়িতে রাষ্ট্র সংঘের(UN) ভুয়ো নাম্বার প্লেট লাগানো ছিল।
আশ্রম কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী অবৈধ ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। তাই তাঁর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে আইননানুগ পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।'
অভিযোগকারীরা ‘শ্রী সারদা ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট’ এ ইডব্লিউএস স্কলারশিপে PGDM কোর্স করছেন। সেই প্রতিষ্ঠানেরই ডিরেক্টর পদে ছিলেন অভিযুক্ত সন্ন্যাসী। পুলিশ সূত্রে খবর, মোট ৩২ জন ছাত্রীদের বয়ান নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৭ জন সরাসরি অভিযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, চৈতন্যনন্দ স্বামী অশালীন ভাষা ব্যবহার করতেন। হোয়াটসঅ্যাপ ও এসএমএস এ অশ্লীল মেসেজ পাঠাতেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাড টাচেরও অভিযোগ তুলছেন তাঁরা।
আশ্রমে তাঁর চেলারাও সাহায্য করতেন বলে অভিযোগ
ছাত্রীদের অভিযোগ, ওই প্রতিষ্ঠানের তিনজন মহিলা শিক্ষক ও অ্যাডমিন চৈতন্যনন্দ স্বামীর এই কুকর্মে সাহায্য করতেন। তাঁদের চাপে পড়েই বহু ছাত্রীকে স্বামী চৈতন্যনন্দের অনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তদন্তকারীদের মতে সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত এই তিনজনের ভূমিকা ঠিক কী, তা স্পষ্ট হবে না।
পুলিশের তৎপরতা
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে। অভিযুক্তের আশ্রম এবং একাধিক ঠিকানায় হানা দিয়েছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে একাধিক হার্ড ডিস্ক এবং ভিডিও রেকর্ডার। সেগুলি ইতিমধ্যেই ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।