
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ইতিহাস সৃষ্টি করলেন শবরীমালায় প্রার্থনা করে। তিনি হলেন ভারতের প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতি যিনি শবরীমালার বিখ্যাত আয়াপ্পা মন্দিরে গিয়ে দর্শন করলেন ও প্রার্থনা করলেন।
২০২৫ সালের অক্টোবরে, রাষ্ট্রপতি মুর্মু ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুসরণ করে পাম্বা নদীতে পা ধুয়ে তীর্থযাত্রা শুরু করেন। এরপর তিনি পাম্বার ভগবান গণপতি মন্দিরে প্রার্থনা করে ‘কেত্তুনিরা’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। কালো শাড়ি পরে তিনি ‘ইরুমুদি’ নামে পরিচিত পবিত্র বান্ডিল মাথায় নিয়ে ১৮টি পবিত্র ধাপ বেয়ে উঠে যান আয়াপ্পার মূল মন্দির গর্ভগৃহে।
এই দর্শন শুধুমাত্র ধর্মীয় দিক থেকেই তাৎপর্যপূর্ণ নয়, এটি সামাজিক ইতিহাসেও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায়ে ১০-৫০ বছর বয়সী নারীদের শবরীমালায় প্রবেশের উপরে থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়। সেই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতির এই সফর প্রতীকী গুরুত্ব বহন করে।
তিনি ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি যিনি এই মন্দির পরিদর্শন করলেন। তাঁর আগে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি ১৯৭০-এর দশকে এখানে এসেছিলেন। রাষ্ট্রপতির জামাতা ও অন্যান্য সফরসঙ্গীরাও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে তীর্থযাত্রায় অংশ নেন। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত এবং কেরালা সরকারের প্রতিনিধিরা তাঁকে ‘পূর্ণ কুম্ভ’ দিয়ে স্বাগত জানান।
বিজেপি সাংসদ বান্দি সঞ্জয় কুমার রাষ্ট্রপতির এই সফরকে সম্মানের চোখে দেখেছেন। তিনি বলেন, 'তিনি কোনও নিয়ম ভাঙেননি, বরং বিশ্বাসকে সম্মান করেছেন।'
রাষ্ট্রপতির এই সফর কেবল একটি ব্যক্তিগত ভক্তি প্রকাশ নয়, বরং ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান ও অধিকার সম্পর্কে এক শক্তিশালী বার্তা বহন করে। এটি নারী ক্ষমতায়নের একটি প্রতীক হয়ে থাকবে, এবং লক্ষ লক্ষ আয়াপ্পা ভক্তের হৃদয়ে এক গর্বের মুহূর্ত হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।