বাংলা জিতেই রাজ্যের বাইরে দলের বিস্তারে উদ্যোগী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। গোয়া, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিল তারা। সেই উদ্যোগই ধাক্কা খেল সোমবার নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায়। তারা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, এবার থেকে তৃণমূল আর জাতীয় দল নয়। সেই সঙ্গে সিপিআই এবং এনসিপি-ও আর জাতীয় দল থাকল না। দিল্লির পর পঞ্জাবে সরকার গড়েছে আম আদমি পার্টি। তারা পেল সর্বভারতীয় দলের তকমা।
জাতীয় দল হওয়ার কী কী শর্ত?
জাতীয় দল হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে একটি পূরণ করা জরুরি। প্রথমত, লোকসভা নির্বাচনে অন্তত তিনটি রাজ্যে প্রার্থী দিতে হবে একটি দলকে। সেই সঙ্গে জিততে হবে দেশের মোট লোকসভা আসনের ২ শতাংশে। দ্বিতীয়ত, লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ৪টি রাজ্যে ৬ শতাংশ করে ভোট পেতে হবে। এবং এক বা তার বেশি রাজ্যে পেতে হবে ৪টি লোকসভা আসন। তৃতীয়ত, ৪টি বা তার বেশি রাজ্যে রাজ্যদলের তকমা। উপরোক্ত তিন শর্তের যে কোনও একটি পূরণ করলেই মেলে জাতীয় দলের তকমা। যার কোনওটাই মানদণ্ডই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল পূরণ করতে পারেনি। ফলে জাতীয় দলের তকমা হারাল তারা।
নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এই দলগুলিকে জাতীয় দলের মর্যাদা দেওয়া হলেও তারা সেই অনুযায়ী ফল করতে পারেনি। তাই এই মর্যাদা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের ২টি লোকসভা নির্বাচন এবং ২১টি রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) এবং রাষ্ট্রীয় লোক দলের (আরএলডি) থেকে আঞ্চলিক দলের মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন সময়ে সময়ে জাতীয় এবং রাজ্য রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থান পর্যালোচনা করে। ২০১৯ সাল থেকে নির্বাচন কমিশন ১৬টি রাজনৈতিক দলের মর্যাদা উন্নীত করেছিল। ৯টি জাতীয়/রাজ্য রাজনৈতিক দলের তকমা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- তৃণমূলে অভিমানী মমতা ঘনিষ্ঠ ফিরহাদ! একের পর এক ঘটনায় কীসের ইঙ্গিত?
জাতীয় দল হওয়ার সুবিধা
১। জাতীয় দলকে একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। একটি জাতীয় দলের নির্বাচনী প্রতীক সারা দেশে অন্য কোনো দল ব্যবহার করতে পারবে না।
২। স্বীকৃত 'রাষ্ট্রীয় ও জাতীয়' দলগুলিকে মনোনয়ন দাখিলের জন্য শুধুমাত্র একজন প্রস্তাবকের প্রয়োজন।
৩। স্বীকৃত 'রাজ্য' এবং 'জাতীয়' দলগুলিকে নির্বাচন কমিশন বিনামূল্যে দুই সেট ভোটার তালিকা প্রদান করে (ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে)। এছাড়াও, এই দলগুলি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সাধারণ নির্বাচনের সময় বিনামূল্যে ভোটার তালিকার একটি অনুলিপি পান।
৫। এই দলগুলি দলীয় কার্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের কাছ থেকে জমি বা ভবন পায়।
৬। রাজ্য এবং জাতীয় দলগুলি ৪০ জন তারকা প্রচারক নিয়োগ করতে পারে এবং অন্যান্য দলগুলি নির্বাচনী প্রচারের সময় '২০ তারকা প্রচারক' নিয়োগ করতে পারে। যাতায়াত খরচ দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনী খরচের অন্তর্ভুক্ত নয়।
৬। নির্বাচনের আগে জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ে টেলিভিশন এবং রেডিও সম্প্রচারের অনুমতি দেওয়া যাতে তারা সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে।