scorecardresearch
 

Ex Muslim : ক্রমাগত বাড়ছে এক্স-মুসলিম সম্প্রদায়, পরিচয় লুকিয়ে ভারতেও আছে তারা

বর্তমানে খ্রিস্টধর্মের মানুষের সংখ্যা সব থেকে বেশি। ইসলাম দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এই ইসলাম খুব দ্রুত দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও বহু মানুষ ইসলাম ত্যাগও করছে।

Advertisement
File Photo File Photo
হাইলাইটস
  • বর্তমানে খ্রিস্টধর্মের মানুষের সংখ্যা সব থেকে বেশি
  • তবে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এই ইসলাম খুব দ্রুত দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও বহু মানুষ ইসলাম ত্যাগও করছে

পৃথিবীতে সবথেকে দ্রুতহারে বাড়ছে ইসলাম ধর্মের মানুষের সংখ্যা। Pew রির্সাচের তরফে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। তাদের মতে, ২০৩৫ সালে ইসলাম ধর্মের মানুষের সংখ্যা সবথেকে বেশি হবে। বর্তমানে খ্রিস্টধর্মের মানুষের সংখ্যা সব থেকে বেশি। ইসলাম দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এই ইসলাম খুব দ্রুত দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও বহু মানুষ ইসলাম ত্যাগও করছে। তারা আবার নিজেদের নাস্তিক বা অন্য কোন ধর্মের অনুসারী বলে না, বরং প্রাক্তন মুসলিম (Ex Muslim) বলে। এই পরিচয় নিয়েই থাকছে তারা।

যারা ইসলাম পালন করে তারা ধর্মের ব্যাপারে খুবই কঠোর। তারা সব নিয়ম মেনে চলে বা স্বর্গ-নরকের মতো জিনিসে বিশ্বাস করে। তবে যারা নিজেদের প্রাক্তন মুসলিম বলে পরিচয় দিচ্ছে তারা কিন্তু ঠিক বিপরীত। ইসলামের রীতিনীতিকে আদৌ তারা প্রশ্রয় দেয় না। মানে না। বরং ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তারা কথা বলে। মানুষ যাতে এই ধর্ম ত্যাগ করে, সেই পরামর্শ দেয়। 

তবে যারা এই ধর্ম ত্যাগ করে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে। ২০১৬ সালে এর উপর একটি তথ্যচিত্র নির্মিত হয়। নরওয়েতে নির্মিত সেই তথ্যচিত্রে দেখানো হয়, প্রাক্তন মুসলমানরা কীভাবে ভয়ে জীবন যাপন করছে। কীভাবে তারা চরমপন্থীদের কাছ থেকে হুমকি পাচ্ছে। সেই তথ্যচিত্রে এও দেখানো হয়, সেই অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রাক্তন মুসলিমরা সমমনোভাবাপন্ন লোকজনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সংগঠন গড়ে তোলে। 

আরও পড়ুন

প্রাক্তন মুসলমানদের সবচেয়ে বড় কাজ, তাদের চিন্তাধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। মানে ইসলাম থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখা। এর জন্য তারা সভা সমাবেশ করে। সোশ্যাল মিডিয়া, মিডিয়া এবং জনসমাবেশ করে। তবে যেহেতু তাদের কাজ ধর্ম বিরোধী বলে দেগে দেওয়া হয়, তাই এই সম্প্রদায়ের মানুষজন হুমকি পায়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই নাম-মুখ লুকিয়ে কাজ করে। 

Advertisement

২০০৭ সালে, জার্মানিতে প্রাক্তন মুসলিমদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল গঠিত হয়, যা ইউরোপের বৃহত্তম প্ল্যাটফর্ম ছিল। এরপর এইরকম দল গঠন শুরু হয় আরও। ভারতের কেরলেও প্রাক্তন মুসলিম সম্প্রদায় বৃদ্ধি পায় এবং আমেরিকা ও ইউরোপের দর্শন বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এখন ভারতের কেরলে প্রাক্তন মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে। তারা তাদের পরিচয় গোপন রেখে কাজ করে না, বরং তারা একটি সংগঠন তৈরি করেছে যার নাম কেরালার প্রাক্তন মুসলিম (EMU)। পাঁচ বছর আগে এই সংগঠনটি গঠিত হয়েছিল। এর বাইরে ধর্মহীন নাগরিক নামে একটি দলও রয়েছে। এরা শুধু তারা নয় যারা ইসলাম ত্যাগ করে বা ঘৃণা করে, যারা কোন ধর্মে বিশ্বাস করে না, তারা সেই সংগঠনে থাকতে পারে। 

তথ্য বলছে, এদের অধিকাংশই উচ্চ শিক্ষিত মানুষ। তারা দাবি করে যে, ইসলামে বিজ্ঞানের কোনও জায়গা নেই। গান ও নাচের মতো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডও নিষিদ্ধ। তবে ভারতে কতজন মানুষ মুসলিম ধর্ম ত্যাগ করে প্রাক্তন মুসলিম হচ্ছেন তার কোনও তথ্য নেই। প্রাক্তন মুসলিম সাহিল, সমীর, জাফর হেরেটিক, সাচওয়ালা এবং আজাদ গ্রাউন্ডের মতো অনেক নাম রয়েছে, যারা ভারতের প্রাক্তন মুসলিম এবং ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করে।

২০১৮ সালে প্রকাশিত পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি রিপোর্ট দেখায়, আমেরিকায় বসবাসকারী প্রাপ্তবয়স্কদের ২৩ শতাংশ যারা মুসলিম পরিবারে বেড়ে উঠেছে তারা নিজেদের আর মুসলিম বলে না। এর মধ্যে ৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে, তারা ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে একমত নয়। সমীক্ষায় এও তথ্য উঠে এসেছে, অত্যাচারের ফলে অনেকে চেয়েও এই ধর্ম ত্যাগ করতে পারে না। 

উদাহরণস্বরূপ, লেবাননের ৪৩% মানুষ স্বীকার করেছে, তারা তাদের বাড়িতে বা কমফোর্ট জোনে ইসলাম পালন করে না। গবেষণা নেটওয়ার্ক আরব ব্যারোমিটার ২৫ হাজার মানুষের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। প্রাক্তন মুসলিম বা নাস্তিক হয়ে ওঠার আর একটি অসুবিধা হল, সরকার একে স্বীকৃতি দেয় না।

মধ্যপ্রাচ্যে ধর্মের উপর সবচেয়ে বড় সমীক্ষা হয় ১৯৮১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমীক্ষায় দেখা যায়, ইরাক, তিউনিসিয়া এবং মরক্কোর মতো দেশে যারা ইসলামে বিশ্বাসী তারা এখন নিজেদের নাস্তিক বলতে শুরু করেছে। যদিও তারা গোপনে এই কথা বলে। 

Advertisement