Rajya Sabha Members: রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাজ্যসভার জন্য চারজন সদস্যকে মনোনীত করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, প্রবীণ আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, কেরালার শিক্ষাবিদ সি সদানন্দন মাস্টার এবং ইতিহাসবিদ ডঃ মীনাক্ষী জৈন। পূর্ববর্তী সদস্যদের অবসর গ্রহণের পর শূন্য হওয়া চারটি আসন পূরণের জন্য এই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এই মনোনয়ন রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এসেছে
সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এই মনোনয়ন এসেছে শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫ তারিখে। উজ্জ্বল নিকমকে দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সরকারি আইনজীবীদের মধ্যে গণ্য করা হয়। তিনি ২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলা, আজমল কাসাব মামলা সহ অনেক হাই-প্রোফাইল মামলায় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সম্প্রতি, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে, বিজেপি তাকে মুম্বই নর্থ সেন্ট্রাল আসন থেকেও প্রার্থী করেছিল। তবে, তিনি নির্বাচনে হেরে যান।
হর্ষ শ্রিংলা কে?
এই তালিকায়, হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং উজ্জ্বল নিকমের নাম বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যারা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য স্বীকৃত। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব ছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁকে কূটনীতি এবং কৌশলগত বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
উজ্জ্বল নিকম কে?
উজ্জ্বল নিকম দেশের সুপরিচিত বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটরদের মধ্যে গণ্য, যিনি অনেক হাই-প্রোফাইল এবং সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৯১ সালে কল্যাণ বোমা বিস্ফোরণ মামলার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন আলোচনায় আসে, যেখানে তিনি প্রধান অভিযুক্ত রবীন্দ্র সিংকে দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এর পরে, ১৯৯৩ সালের মুম্বই সিরিয়াল বোমা বিস্ফোরণ মামলায় রাজ্য সরকার তাঁকে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিযুক্ত করে, যা তাঁর কর্মজীবনের একটি বড় মোড়। নিকম ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে টাডা আদালতে কাজ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত মামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত মামলা ছিল ২০০৮ সালের ২৬/১১ মুম্বই হামলা, যেখানে তিনি পাকিস্তানি জঙ্গি আজমল কাসাবের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের পক্ষে জোরালোভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। পরে, নিকম প্রকাশ করেন যে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে কাসাবের জেলে মাটন বিরিয়ানি দাবি করার খবর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন যাতে জনসাধারণের ক্ষোভ সঠিক দিকে পরিচালিত হয়। এই বক্তব্য দীর্ঘদিন ধরে খবরে ছিল।
ডঃ মীনাক্ষী জৈন কে?
ডঃ মীনাক্ষী জৈন মধ্যযুগীয় ও ঔপনিবেশিক ভারতের একজন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্গী কলেজের ইতিহাসের প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক, নেহেরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম ও লাইব্রেরির প্রাক্তন ফেলো এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের গভর্নিং কাউন্সিলের প্রাক্তন সদস্য। তিনি বর্তমানে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চের একজন সিনিয়র ফেলো। তাঁর গবেষণার আগ্রহের মধ্যে রয়েছে মধ্যযুগীয় এবং আধুনিক ভারতের প্রাথমিক পর্যায়ের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিকাশ। তাঁর গভীর গবেষণামূলক বইগুলি জাতীয় গুরুত্বের ঐতিহাসিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে। দ্য ফ্লাইট অফ দ্য গডস অ্যান্ড দ্য রিবার্থ অফ টেম্পলস (২০১৯), দ্য ওয়ার ফর রাম: দ্য কেস ফর দ্য টেম্পল অ্যাট অযোধ্যা (২০১৭), সতী: ইভাঞ্জেলিস্ট, ব্যাপটিস্ট মিশনারিজ অ্যান্ড চেঞ্জিং কলোনিয়াল ডিসকোর্সেস (২০১৬), রাম অ্যান্ড অযোধ্যা (২০১৩), প্যারালাল পাথস: এ্যাসেস অন হিন্দু-মুসলিম রিলেশনস (১৭০৭-১৮৫৭) (২০১০)। ২০২০ সালে, ডঃ মীনাক্ষী জৈন তার অবদানের জন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মশ্রী পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
সদানন্দন মাস্টার কে?
সদানন্দন মাস্টার কয়েক দশক ধরে শিক্ষা ও সমাজসেবার ক্ষেত্রে কাজ করে আসছেন। তিনি বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণি, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের মধ্যে শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন। তৃণমূল পর্যায়ে কর্মরত একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর ভাবমূর্তি রয়েছে তাঁর।