ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-এর প্রথম গগনযান মিশন মনুষ্যবিহীন হলেও প্রাণী পাঠানো হবে। এই মিশনের বিশেষত্ব হলো, প্রথম ফ্লাইটে মানুষের পরিবর্তে ছোট ফল মাছি (ড্রোসোফিলা) মহাকাশে পাঠানো হবে। ফল মাছি পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য হলো মহাকাশচারীদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে গবেষণা করা। এই গবেষণা ISRO-এর একটি বড় পদক্ষেপ মহাকাশযাত্রার জন্য প্রস্তুতি বাড়াতে।
কেন মাছি?
ফল মাছির জিনের ৭৭ শতাংশ মানুষের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। মাছিদের শরীরের রেচনতন্ত্রও মানুষের মতোই। তাই মহাকাশে মাছি পাঠিয়ে বিজ্ঞানীরা জানতে চান, সেখানে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কতটা, এবং এটি মহাকাশচারীদের ক্ষেত্রে কিভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। এই গবেষণায় প্রায় ২০টি পাত্রে ভরা ফল মাছি পাঠানো হবে।
কিডনিতে পাথর নিয়ে গবেষণার গুরুত্ব
মহাকাশচারীরা দীর্ঘদিন মহাকাশে থাকলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণ হলো মহাকাশে খাবার এবং পানীয় গ্রহণের পরিমাণ কম থাকে, যাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন না পড়ে। এছাড়া মহাকাশে থাকার কারণে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, যা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে। এই কারণে ISRO মহাকাশে কিডনিতে পাথর নিয়ে গবেষণা করতে চায়।
গবেষণার নেতৃত্ব
এই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্পেস অ্যান্ড টেকনোলজি (IIST) এবং ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস, ধরওয়াড়ের বিজ্ঞানীরা। ISRO-এর সহযোগিতায় তাঁরা এই গবেষণায় কাজ করছেন। এই প্রকল্পের জন্য ১.২৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
গগনযানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ISRO-এর পরিকল্পনা অনুযায়ী, গগনযানের প্রথম মিশন (G-1) ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে উৎক্ষেপিত হতে পারে। এটি একটি মানবহীন মিশন হবে। এর পরে, ২০২৫ সালের মধ্যে আরও চারটি মিশন সম্পন্ন হবে। এর মধ্যে জি-২ মিশন হবে মানবহীন, যেখানে হিউম্যানয়েড রোবট পাঠানো হবে। এই সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর, ২০২৫ বা ২০২৬ সালে প্রথম মানব মিশন (H-1) পাঠানো হবে। দ্বিতীয় মানব মিশনটি হবে তিনদিনের, যা পরবর্তীতে নির্ধারিত হবে।
এই মিশনের সফলতা ভারতকে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, এবং এটি হবে ISRO-এর একটি বড় অর্জন।