হরিয়ানা পুলিশের দুই সিনিয়র অফিসারের পরপর আত্মহত্যা। আর সেই ঘটনার তদন্তে প্রতিদিন রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে।
আপাতত এই দুই আত্মহত্যার ঘটনার পিছনে পুলিশের অভ্যন্তরীণ জাতিগত বৈষম্য, দুর্নীতি এবং অনৈতিকভাবে টাকা তোলার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া নতুন করে পুলিশ-গ্যাংস্টার যোগের অভিযোগও সামনে আসছে। যার ফলে হরিয়ানা পুলিশের বিশ্বাসযোগ্যতাই এখন কমতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞরা।
ঘটনার সূত্রপাত কোথায়?
সিনিয়র আইপিএস অফিসার ওয়াই পূরণ কুমারের আত্মহত্যার মাধ্যমেই এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। তিনি তাঁর ঊর্ধ্বতন অফিসারদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগ এনেছিলেন।
এর পরই নতুন মোড় নেয় মামলাটি। এই সময়ই অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর সন্দীপ লাথারও নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন। তিনি সুইসাইড নোটে পূরণ কুমারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন।
এমন পরিস্থিতিতে প্রবল চাপের মুখে পড়ে যায় বিজেপি সরকার। তাদের পক্ষ থেকে ডিজিপি শত্রুজিৎ কাপুরকে ছুটিতে পাঠিনো হয়। পাশাপাশি রোহতকের পুলিশ সুপার নরেন্দ্র বিজারনিয়াকে বদলিও করা হয়।
প্রসঙ্গত, পূরণ কুমারের সুইসাইড নোটে নাম থাকা ৮ জন সিনিয়র আইপিএস অফিসারের মধ্যে এঁরাও ছিলেন।
গ্যাংস্টার-পুলিশ যোগ
এএসআই সন্দীপ লাথারের অভিযোগ ছিল আইপিএস অফিসার পূরণ কুমারের বিরুদ্ধে। পূরণ কুমার একটি খুনের মামলা থেকে গ্যাংস্টার রাও ইন্দ্রজিৎ-এর নাম বাদ দেওয়ার জন্য ৫০ কোটি টাকার একটি চুক্তি করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, রাও ইন্দ্রজিৎ 'James Music' নামে একটি সংস্থা চালান। এখন তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আত্মগোপন করে আছেন বলে জানা গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, রাও ইন্দ্রজিৎ কুখ্যাত হিমাংশু ভাউ গ্যাং-এর সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। তাঁর নাম
সম্প্রতি রোহতকের অর্থ-ব্যবসায়ী মনজিতের হত্যা মামলায় উঠে এসেছিল। এছাড়া ইউটিউবার এলভিস যাদবের বাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনাতেও তিনি যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। আবার গায়ক ফাজিলপুরিয়ার উপর হামলার ঘটনাতেও রাও ইন্দ্রজিৎ-এর নাম এসেছিল।
তাই অনেকেই মনে করছেন, বৈষম্যের পাশাপাশি গ্যাংস্টারদের সঙ্গে কিছু আধিকারিদকের ওঠাবসাও এই আত্মহত্যাগুলির পিছনে থাকতে পারে।
ঘটনাটি রাজনৈতিক মোড় নিয়েছে
ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির মধ্যে। এক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি একযোগে অভিযোগ করছে যে, দলিত সম্প্রদায়ের অফিসার পূরণ কুমারকে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সেই কারণেই তিনি চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন।