৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধ ৮ ঘণ্টাতেই শেষ। চাপের মুখে ফোনে আলোচনার পথে আসতে চায় পাকিস্তান। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বড় তথ্য জানালেন সিডিএস জেনারেল অনিল চৌহান।
অপারেশন সিঁদুরে ভারতেরও সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সম্প্রতি সেটা জানিয়েছিলেন সিডিএস অনিল চৌহান। কিন্তু তাঁর সেই বক্তব্য ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। এর মাঝেই পর ফের মুখ খুললেন প্রতিরক্ষা প্রধান। মঙ্গলবার পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটাই গুরুত্বপূর্ণ যে অভিযানের ফলাফল কী হয়েছে।’
জেনারেল চৌহান বলেন, 'অপারেশন সিঁদুরের সময় যুদ্ধ এবং রাজনীতি একইসঙ্গে চলছিল। আমরা আরও ভালো কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম থাকার সুবিধাটা পেয়েছি।' সিডিএস বলেন, '১০ মে রাত ১টাতেই পাকিস্তান যুদ্ধে হেরে গিয়েছিল। আমরা ৪৮ ঘন্টার যুদ্ধ ৮ ঘন্টার মধ্যে শেষ করে দিয়েছি। তারপর ওরা ফোন ধরে বলে যে তারা কথা বলতে চায়।'
তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী কোনও ব্যর্থতা বা ক্ষতির মুখে টলে যায় না। যুদ্ধের সময় মনোবল অটুট রাখাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অভিযানে যদি কিছু ভুল হয়েও থাকে, সেগুলোকে চিহ্নিত করে শুধরে নেওয়াটা জরুরি। অভিযানের ফলাফলই আসল, কী ক্ষতি হল, সেটা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এর আগেও বলেছি, যে এই ক্ষয়ক্ষতি কোনও বড় বিষয়ই নয়। সবচেয়ে বড় বিষয়টা হল, আমরা কী ফলাফল পেলাম।’
সিঙ্গাপুরে ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল চৌহান স্বীকার করেছিলেন যে, অপারেশন সিঁদুর শুরুর পর্যায়ে কিছু ভারতীয় যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যদিও তিনি এটাও বলেন যে, সামরিক বাহিনী দ্রুত নিজেদের ভুল শুধরে পুনরায় ইসলামাবাদে আঘাত হানে।
তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যে বিষয়টা অনেকটাই বাড়িয়ে দাবি করেছেন, সেকথাও বলেন। পাক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন যে, ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে চারটি রাফালও ছিল, সেগুলি ধ্বংস করা হয়েছে। সেই দাবি 'সম্পূর্ণ ভুল' বলে উড়িয়ে দেন জেনারেল চৌহান।
তিনি বলেন, ‘কোনও যুদ্ধবিমান নামানো হয়েছে কিনা সেটা মুখ্য বিষয় নয়, মূল বিষয়টি হল, কেন তা নামানো হয়েছে। কী ভুল হয়েছিল, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। সংখ্যাটা নয়।’
বিদেশের মাটিতে তাঁর এই মন্তব্যের পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। বিরোধী দলগুলি সরকারকে নিশানা করছে। তাদের দাবি, দেশের মাটিতে, সংসদকে অবগত না করে বিদেশে এমন তথ্য প্রকাশ করা অনুচিত। কংগ্রেসের একাধিক নেতা এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বৃহৎ পর্যায়ের রাজনৈতিক আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আলোচনার জন্য বিশেষ সংসদীয় অধিবেশনের দাবিও তুলেছেন কংগ্রেস নেতারা।
এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তারা বলছে, দেশের স্বার্থে এই ধরনের সংবেদনশীল তথ্য আগে সংসদে জানানো উচিত ছিল। বিদেশে গিয়ে এভাবে মন্তব্য করাটা দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মত তাদের।