মহারাষ্ট্রে নয়া ভাইরাস আতঙ্ক। পুণেতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গিলেন বারি (Guillain-Barre Syndrome) ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, গিলেন বারি ভাইরাসই প্রাণ কেড়েছে সেই ব্যক্তির। পুণেতে এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০১। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির বয়স ৪০। ডায়রিয়া হয়েছিল তাঁর। এছাড়াও সর্দি-কাশি-জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। গত ১৮ জানুয়ারি তাঁকে এক বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়। সেজন্য জেনারেল বেডে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে কদিন পর থেকে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ফের আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মারা যান তিনি।
দেহের ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে মৃত্যুর কারণ হল GBS বা গিলেন বারি ভাইরাস। মৃতের ব্রেন, টিস্যু ইত্যাদির নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এই মৃত্যুর খবর সামনে আসার পর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ জন। এতদিন পর্যন্ত এই ভাইরাসে প্রতি মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ থেকে ৩। তবে তা এখন হু হু করে বাড়ছে।
পুণেতে বর্তমানে গিলেন বারি ভাইরাসে আক্রান্ত এমন ১৬ জনকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে। ১৯ জন আক্রান্ত এমন আছে যাদের বয়স ৯ বছরের কম। ৫০ থেকে ৮০ বছর বয়সের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩।
পুণের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বেশ কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকার মানুষ এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সেই সব এলাকার জল পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
গিলেন বারি ভাইরাস কী, এর লক্ষণগুলো জানুন -
জিবিএস বা গিলেন বারি একটি বিরল অবস্থা যেখানে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইমিউন সিস্টেম ভুলভাবে স্নায়ু আক্রমণ করে। এর ফলে শারীরিক দুর্বলতা, পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হতে পারে রোগী।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, সর্দি, ডায়ারিয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। তবে দিন যত বাড়তে থাকে তত সংক্রমণ বাড়তে থাকে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এর সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রায় ৬ মাস পরে একজন রোগী সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন। তবে অনেকের ক্ষেত্রে সেই সময় সীমা বেড়ে এক বছরও হতে পারে।