হেয়ারস্টাইলিস্ট জাভেদ হাবিব এবং তাঁর ছেলে আনস হাবিবের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে এবার তল্লাশি পরোয়ানা জারি হল। ক্রিপ্টোকারেন্সি জালিয়াতি মামলায় সম্ভল পুলিশ ওই পরোয়ানা জারি করেছে। অভিযোগ, ফলিকল গ্লোবাল কোম্পানির ব্যানারে বিনিয়োগের লোভ দেখিয়ে শতাধিক মানুষকে প্রতারণা করেছেন এই পিতা-পুত্র।
৫০-৭৫% রিটার্নের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকার বিনিয়োগ সংগ্রহ
হাবিব ও তাঁর সহযোগীরা বিটকয়েন এবং বিন্যান্স কয়েন-এ বিনিয়োগের মাধ্যমে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ রিটার্নের লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করেন। ২০২৩ সালে সম্ভলের রয়্যাল প্যালেস ভেঙ্কট হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তারা এই প্রকল্প প্রচার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় ১৫০ জন বিনিয়োগকারী ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা করে বিনিয়োগ করেন। যার মোট পরিমাণ আনুমানিক ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা।
রিটার্ন না পেয়ে প্রতারণার অভিযোগ, একের পর এক এফআইআর
এক বছরের মধ্যে কোনও রিটার্ন না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। তদন্তে জানা যায়, হাবিব ও তার সহযোগীরা FLC প্রকল্পটি গুটিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এরই প্রেক্ষিতে, হাবিব, তাঁর ছেলে আনস হাবিব ও FLC-এর স্থানীয় প্রধান সইফুল্লাহর বিরুদ্ধে ৩৩টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
দিল্লির বাড়িতে হানা, এবার মুম্বই
সাব-ইন্সপেক্টর পবিত্রা পারমারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে হাবিবের বাসভবনে তল্লাশি চালায়। যদিও হাবিবকে সেখানে পাওয়া যায়নি। তাঁর ভাই আমজাদ হাবিব পুলিশকে জানান, জাভেদ এখন সেখানে থাকেন না। এরপর দলটি প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে বাড়িটি তল্লাশি করে ফিরে আসে।
পুলিশ সুপার কে কে বিষ্ণোই বলেছেন, 'এখন হাবিবের মুম্বইয়ের ঠিকানায় তল্লাশি চালানো হবে। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে সব প্রাসঙ্গিক নথি সংগ্রহ করব। এবং তদন্তে সহযোগিতা না করলে কঠোর পদক্ষেপ নেব।'
হাজির না হয়ে অজুহাত, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আইনজীবী পাঠানো
১২ অক্টোবর হাবিবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তিনি নিজে উপস্থিত হননি। তার পরিবর্তে, আইনজীবী পবন কুমার পুলিশকে জানান যে, জাভেদ হাবিব অসুস্থ। এবং তিনি কিছু নথিপত্র জমা দেন। পুলিশ সুপার বিষ্ণোই স্পষ্টভাবে বলেন, 'এই অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়।'
গ্যাংস্টার আইনের আওতায় ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ
বহু প্রতারিত ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এবং অভিযোগ দায়ের করছেন। পুলিশ জানিয়েছে, পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনের আওতায় মামলা দায়ের করা হবে। এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার
এসপি বিষ্ণোই বলেন, 'আমরা জাভেদ হাবিব এবং তাঁর সহযোগীদের খুঁজে বের করতে, তথ্য সংগ্রহ করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সকল সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিচ্ছি।'