হরিয়ানার ফরিদাবাদে আবারও গোরক্ষকদের সন্ত্রাসের বলি হলেন এক নিরীহ স্কুল ছাত্র। ১২ শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান মিশ্রকে গুলি করে হত্যা করেছে স্বঘোষিত গো-রক্ষক দল। গত সোমবার রাতে, আগ্রা-দিল্লি জাতীয় সড়কে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, আরিয়ান মিশ্র তাঁর দুই বন্ধু শাঙ্কি ও হারশিতের সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন, তখনই গোরক্ষকরা তাদের গাড়িকে সন্দেহবশত ধাওয়া করে এবং গুলি চালায়।
ঘটনা কীভাবে ঘটল?
সোমবার রাতে ফরিদাবাদের একটি অংশে তথাকথিত গোরক্ষক দল গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করছিল। তাদের কাছে খবর ছিল যে, একটি বিশেষ ব্র্যান্ডের গাড়িতে করে গো-মাংস পাচার করা হচ্ছে। আরিয়ানের গাড়ি দেখে গোরক্ষকরা সেটি থামানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু গাড়ির চালক গাড়ি না থামিয়ে চালিয়ে যান, কারণ গাড়িতে থাকা আরিয়ান ও তাঁর দুই বন্ধুর সাথে চার গোরক্ষক অনিল কৌশিক, কৃষ্ণা, অধেষ এবং বরুণের পুরনো শত্রুতা ছিল।
গাড়িটি যখন হরিয়ানার গোধপুরি এলাকায় পৌঁছায়, তখন পিছন থেকে ছোড়া গুলি আরিয়ানের গলায় লাগে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
ভুল টার্গেট
গো-রক্ষকরা আরিয়ানের গাড়ি থামানোর পর বুঝতে পারে যে, এটি গো-মাংস পাচারকারীদের গাড়ি নয়। গাড়িতে আরও দু’জন মহিলা যাত্রী ছিলেন, যা দেখে তারা বুঝতে পারে যে তারা ভুল গাড়িকে টার্গেট করেছে। তবে ততক্ষণে আরিয়ান মিশ্র প্রাণ হারিয়েছেন।
ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাস
এই ঘটনা হরিয়ানায় ক্রমবর্ধমান গোরক্ষা সন্ত্রাসের এক ভয়াবহ উদাহরণ। গত সপ্তাহেই হরিয়ানায় এক বাংলার পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছিল গোরক্ষকরা। সেই শ্রমিকের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ছিল। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে, রাজ্যে মেরুকরণের উদ্দেশ্যে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড বেড়ে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশি পদক্ষেপ
এখনও পর্যন্ত, পুলিশ হত্যাকারী গোরক্ষকদের গ্রেফতার করতে পারেনি। যদিও ঘটনাটির তদন্ত চলছে, তবে এই ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে জোরালো প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর, হরিয়ানায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। রাজনৈতিক মেরুকরণের লক্ষ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে, যা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।