Weather News: ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত। বন্যা ও বৃষ্টিতে এখনও পর্যন্ত ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, দেশের রাজধানী দিল্লিতেও যমুনা নদীর জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের বহু শহরে বৃষ্টির জল ঢুকেছে মানুষের বাড়িতে। মানুষ রাস্তায় বের হতে পারছে না। এ ছাড়া হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং জম্মু কাশ্মীরেও বৃষ্টির প্রকোপ দেখা গেছে। জুলাই মাসে তুলনামূলকভাবে বেশি বৃষ্টিপাত মানুষকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
দিল্লিতেও বন্যার আশঙ্কা
উল্লেখ্য যে, দেশের রাজধানীতে বর্ষার বৃষ্টিতে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা । দিল্লিতে ১৯৭৮ সালের মতো বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। হাতিনিকুন্ড ব্যারেজ থেকে ছেড়ে আসা জল আগামিকালের মধ্যে দিল্লি পৌঁছবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যার কারণে নীচু এলাকায় ভয়াবহ বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। দিল্লি ছাড়াও এনসিআর-এও আবহাওয়া সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টির সতর্কতার মধ্যে আজ অনেক শহরে স্কুল বন্ধ রয়েছে।
রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে এসেছে
বিপর্যয় নেমে এসেছে রাজধানী দিল্লিতে। কোথাও রাস্তায় জল জমে আছে আবার কোথাও রাস্তা তলিয়ে গেছে জলের নীচে। কোথাও দেওয়াল ধসে পড়েছে, আবার কোথাও যানজট জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টির কারণে দিল্লিতে এখন বন্যার আশঙ্কা প্রবল। দিল্লির যমুনা নদীর নিকটবর্তী নীচু এলাকাগুলি বন্যার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, যেখানে প্রায় ৩৭ হাজার মানুষ বাস করে। দিল্লি ১৯৭৮ এবং ২০১০ সালে ভয়াবহ বন্যা দেখেছে। আবারও একই ধরনের পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবাসিক এলাকায় ১০ ফুট পর্যন্ত জল জমেছে
বৃষ্টির জল শুধু রাজধানী নয়, আশপাশের শহরগুলোর জন্যও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দৃশ্য ধরা পড়েছে সাইবার সিটি গুরুগ্রামেও। যেখানে বিভিন্ন স্থানে জল ভরাটের কারণে অবস্থার অবনতি হয়েছে। গুরুগ্রামের মতো গাজিয়াবাদেও ভারী বৃষ্টি মানুষের সমস্যা বাড়িয়েছে। অনেক এলাকায় জল এতটাই জমেছে যে মানুষের ঘর থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ট্রোনিকা সিটি এলাকায় প্রায় ১০ ফুট জলের নীচে থাকায় অনেক লোক আটকে পড়ে এবং তাদের সরিয়ে নিতে এনডিআরএফ দলকে ডাকতে হয়েছিল।
#WATCH | Himachal Pradesh | Latest visuals from Mandi around Victoria Bridge, Panchvakhtra Temple and another bridge that has been damaged following incessant heavy rainfall. pic.twitter.com/8gKOfbvfKT
— ANI (@ANI) July 10, 2023
হিমাচল প্রদেশে বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মান্ডি, কুল্লু, কাংড়া, সিমলা সহ রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের পাশাপাশি নদ-নদীতে অতিরিক্ত জলের প্রবাহ জনজীবনকে থমকে দিয়েছে। হিমাচলের পাশাপাশি পঞ্জাবের অনেক জায়গায় ঝড়ের জেরে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উভয় রাজ্যের পরিস্থিতির সম্পূর্ণ আপডেট নিয়েছেন এবং কেন্দ্র থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
Rain Fury in Himachal Pradesh
— Weatherman Shubham (@shubhamtorres09) July 9, 2023
Visuals from Manikaran 🙏🏻 pic.twitter.com/TzSvOP8iLX
মান্ডির থুনাগে আকস্মিক বন্যা হয় এবং থুনাগের প্রধান বাজার এলাকা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক দোকানের মাল ভেসে গেছে এবং অনেক দোকান ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সব মানুষকে নিরাপদে উদ্ধার করার দাবি করেছে প্রশাসন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে পান্ডোহের ১০০ ছরের পুরনো লাল পুলও ভেসে গেছে। মানালির বাহংয়ে নদীর তীরে একটি হোটেল জলে তলিয়ে গেছে।
কুল্লুতে নদীগুলির জলস্তর অত্যন্ত বিপজ্জনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে । বন্যার জল সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তাগুলি নদীতে পরিণতা হয়েছে। পুরো জেলায় শতাধিক রাস্তা বন্ধ রয়েছে এবং সেগুলো খোলার চেষ্টাও ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটকও। সিমলার অনেক জায়গায় ভূমিধসের কারণেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ উপড়ে পড়ায় বৈদ্যুতিক তারও ভেঙে যায় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে, উনায় বৃষ্টি ভেঙেছে ৩০ বছরের রেকর্ড।
পঞ্জাবে ভারী বৃষ্টির কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। মোহালির ডেরাবাসি এলাকার একটি সোসাইটিতে এমনভাবে জল ঢুকেছে যে মানুষের জীবন বিপন্ন। দেরাবাসি হয়বতপুরের মানুষের কাছে বৃষ্টি দুঃস্বপ্নের মতো।অবিরাম বর্ষণে গোটা সোসাইটি ১০ ফুট পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে, এতে বহু মানুষ আটকা পড়েছেন। বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে নৌকা ব্যবহার করা হচ্ছে। গোটা সোসাইটির মানুষ আতঙ্কিত। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে উদ্ধারের জন্য এনডিআরএফ দলকে ডাকতে হয়েছিল।