
চেন্নাই থেকে বিহারের চম্পারণ, দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে এক বিশালাকার শিবলিঙ্গ। ১১০ চাকার ট্রেলারে বহন করা হচ্ছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কিলোগ্রাম ওজনের, ৩০ ফুট উচ্চতার এই শিবলিঙ্গ। যা বর্তমানে ভক্তদের কাছে এক অনন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
তামিলনাড়ুর চেন্নাই থেকে যাত্রা শুরু করা শিবলিঙ্গটি এই মুহূর্তে মধ্যপ্রদেশের জবলপুর পেরিয়ে নাগপুরের দিকে জাতীয় সড়ক-৪৪ ধরে এগিয়ে চলেছে। পথে পথে শিবভক্তদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ এই বিশাল শিবলিঙ্গ দর্শন করছেন, কেউ প্রার্থনা করছেন, কেউ আবার ছবি তুলছেন।
এই শিবলিঙ্গটির উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট এবং ওজন প্রায় ১,৮০,০০০ কিলোগ্রাম। এত বিপুল ওজনের কাঠামো বহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষভাবে তৈরি ১১০ চাকার ট্রেলার। ট্রেলার চালক অরুণ কুমার জানিয়েছেন, প্রায় ২৩ দিন আগে তাঁরা চেন্নাই থেকে রওনা দিয়েছেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আরও প্রায় ২০ দিনের মধ্যে বিহারের চম্পারণে পৌঁছনোর কথা।
চম্পারণে পৌঁছনোর পর এই শিবলিঙ্গটি স্থাপন ও পবিত্র করা হবে নির্মীয়মাণ বিরাট রামায়ণ মন্দিরে। পূর্ব চম্পারণ জেলার জানকীনগরের কাইথওয়ালিয়া গ্রামে এই বিশাল মন্দিরটি গড়ে উঠছে। মন্দির নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে মহাবীর মন্দির ট্রাস্ট কমিটি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মূল মন্দিরটি হবে ১০৮০ ফুট লম্বা ও ৫৪০ ফুট চওড়া। এর সঙ্গে থাকবে আরও ২২টি মন্দির এবং মোট ১৮টি শিখর, যেগুলির উচ্চতা নির্ধারিত হয়েছে ২৭০ ফুট।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই শিবলিঙ্গটি তৈরি হয়েছে একটি মাত্র পাথর দিয়ে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমে এটি নির্মাণ করেছে বিনায়ক ভেঙ্কটরামনের সংস্থা। পুরো প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। স্থপতি লোকনাথ মহাবালীপুরমের পট্টিকাডু গ্রামে অত্যন্ত যত্ন ও দক্ষতার সঙ্গে এই শিবলিঙ্গটি খোদাই করা হয়েছে। শিবলিঙ্গটির গায়ে আরও ১০০৮টি ছোট শিবলিঙ্গ খোদাই করা রয়েছে, যা একে আরও অনন্য ও ঐতিহ্যবাহী রূপ দিয়েছে। শ্রদ্ধা, ভক্তি ও বিস্ময়ের আবেশে ঘেরা এই যাত্রা ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।