'I Love Muhammed' ক্যাম্পেন ঘিরে উত্তেজনা যেন থামছেই না। উত্তরপ্রদেশের বরাবাঁকির জাহাঙ্গিরাবাদ থানার অন্তর্গত ফৈজুল্লাগঞ্জ এলাকায় গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই পোস্টার ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, জনৈক ধনীরাম ওরফে ধন্নী নামে স্থানীয় এক যুবক মদ্যপান করে নেশাগ্রস্ত হয়ে 'I Love Muhammed' পোস্টারটি ছিড়ে ফেলে। ঘটনার খবর চাউর হতেই এলাকার মুসলিমরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করে তারা।
ঘটনাস্থলে পুলিশ
পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এসপি অর্পিত বিজয়বর্গীয় খোদ ঘটনাস্থলে যান এবং সকলকে হিংসা থেকে বিরত থাকার আর্জি জানান। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখে দোষীকে চিহ্নিত করা হবে এবং উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
ঘটনার সূত্রপাত কোথায়?
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এলাকায় হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ৯ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। CCTV ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ধন্নী নামে ওই যুবক লাঠি দিয়ে ওই ব্যানার ছিড়ে ফেলছেন। ঘটনাস্থলে ভিড় ছিল বলেও ফুটেজে ধরা পড়েছে। এই ভিডিও নিয়ে ইতিমধ্যএই দোষীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
উত্তেজক পরিস্থিতির কারণে পুলিশ স্পর্শকাতর এলাকায় রুট মার্চ করেছে। প্রশাসনের তরফেও শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। কোনও বিভ্রান্তিমূলক খবর যাচাই না করে বিশ্বাস না করারও আর্জি জানানো হয়েছে।
জাহাঙ্গিরাবাদ থানার পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ টহল দিচ্ছে এলাকায়।
কী এই 'I Love Muhammad' ক্যাম্পেন?
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতে গত ৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার সূত্রপাত। ইদ মিলাদ-উল-নবি পরবের সময়ে অর্থাৎ হজরত মহম্মদের জন্মতিথিতে 'I Love Muhammad' লেখা পোস্টার দেখা যায় কানপুরের রওয়াতপুরে। সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি ওঠে হিন্দু গোষ্ঠীদের পক্ষ থেকে। অভিযোগ ওঠে, যে এলাকায় হিন্দু এবং মুসলিম দুই সম্প্রদায়েরই বাস এবং রাম নবমীর মতো পরব অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে ইচ্ছাকৃত মুসলিমরা এই পোস্টার নিয়ে পথে নেমেছে। দুই ধর্মের গোষ্ঠীর সদস্যরাই একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক আচরণের অভিযোগ তোলে। হিন্দুদের বক্তব্য, তাদের একাধিক পোস্টারও নষ্ট করেছে মুসলিমরা। পাল্টা মুসলিমদের দাবি, তাদের টার্গেট করা হচ্ছে এবং কেবলমাত্র হজরত মহম্মদের প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করতেই এই পোস্টার তাদের।
সাদার উপর লাল ও কালো কালিতে এই স্লোগান লেখা পোস্টার হাতে পথে নেমেছেন অসংখ্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মূলত উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বী, লখনউ, মহারাজগঞ্জ, তেলঙ্গানার হায়দরাবাদ ও উত্তরাখণ্ডের কাশীপুরে এই আন্দোলন চলছে। তাদের এই আন্দোলন ঘিরে কোনও কোনও অঞ্চলে অশান্তিও ছড়িয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বেঁধেছে।