৭ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ (India Today Conclave)। ৭ ও ৮ মার্চ রাজধানী দিল্লিতে এই কনক্লেভের আয়োজন করা হয়েছিল। কনক্লেভের প্রথমদিন বনেগা তো বড়েগা ইন্ডিয়া সেশনে এসেছিলেন বিহার মিউজিয়ামের সহকারি ডিরেক্টর অশোক কুমার, বস্তার ফুডের কর্ণধার রজিয়া শেখ ও ধর্ম সংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড মেম্বার চুরু রাজীব মর্দা। এই সেশনে এই তিনজনই নিজেদের জীবনের সংঘর্ষ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন।
বস্তার ফুডের কর্ণধার রজিয়া শেখ বলেন, 'আমি আমার কেরিয়ার শুরু করেছিলাম মাওবাদী এলাকা বীজাপুর থেকে।' তিনি এরপর বলেন, 'সেখানকার এক শিশু আমায় জিজ্ঞেস করেছিল যে ম্যাডাম মাওবাদী হয়ে গেলেই ভাল হত প্রত্যেক মাসে ২০ হাজার টাকা পাওয়া যেত। ওই শিশুটিও মাওবাদী হওয়ার রাস্তা জানে অথচ স্বনির্ভর বা স্টার্টআপের বিষয়ে কিছুই জানে না। ওই শিশুর মনে আসা এই প্রশ্নের পরই আমি ভাবলাম যে আমরা সরকারের কাছ থেকে কেন কিছু চাইব, নিজেরাও তো কিছু শুরু করতে পারি। আর এই বিষয়টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা শিশুদের জন্য ফুড ট্রেনিং শুরু করি আর তারপরই বস্তার ফুডের জন্ম।' রজিয়া শেখ আরও বলেন, 'আমিও স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকা গিয়েছিলাম আর সেখানে গিয়ে স্টার্টআপ সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হই। আমরা মহুয়ার ওপর একটি গবেষণা করেছিলাম যা বেশ প্রশংসিত হয়েছিল।'
রজিয়া বলেন, 'একমাস আমেরিকায় থাকার পর আমি ফিরে এসে বাড়ির ল্যাবে চিরঞ্জি, কাজু, মহুয়ার মতো স্বাস্থ্যকর পণ্য নিয়ে গবেষণা শুরু করি। এরপর বস্তারে তৈরি পণ্য বিশ্বের বাজারে পৌঁছে যায়।' তিনি এও জানান রাস্তাঘাট আরও উন্নত হওয়ার কারণে ব্যবসা আরও সহজ হয়ে গিয়েছে, এখন গ্রাম থেকে কাঁচামাল নিয়ে পণ্য তৈরি করে তা ক্লায়েন্টের কাছে পৌঁছে দেওয়া অনেক সুবিধাজনক হয়েছে। রাজিয়া বলেন, 'এই মুহূর্তে বস্তার ফুডসে ৭০০ জনের বেশি মহিলা যুক্ত এবং আমাদের জন্য পণ্য তৈরি করে। এছাড়াও ২ হাজার কৃষক আমাদের কাঁচামাল দেয়।'
নিজের ব্যবসায় কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রজিয়া হয়েছিলেন সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, 'প্রথমে ব্যাঙ্ক আমাদের ঋণ দিচ্ছিল না তাই আমি নিজের বিয়ের জন্য জমানো টাকা বাবার থেকে নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। কারণ আমি জানতাম যে বিয়েতে খরচ হওয়া টাকা ফেরৎ পাব না কিন্তু ব্যবসায় টাকা খাটিয়ে তার তিনগুণ আমি উপার্জন করতে পারব। এখন আমরা এক কোটির বেশি সংস্থা দাঁড় করিয়ে দেওয়ায় ব্যাঙ্ক নিজে এসে আমাদের ঋণ দিতে প্রস্তুত আছে।' প্রসঙ্গত, শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস আর এইদিনে এমন এক মহিলা তাঁর স্বনির্ভর হওয়ার কাহিনি শোনালেন, যা সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক।