India Today Indo-UAE Conclave: 'ভারত ও UAE, দুই দেশ, এক ভবিষ্যত্‍,' বললেন অরুণ পুরী

বক্তব্যের শুরুতেই পুরী নিজের স্মৃতিচারণায় বলেন, 'আমি প্রথম দুবাই এসেছিলাম ১৯৭০ সালে, আজ থেকে ৫৫ বছর আগে। তখন এই শহরে খুবই অল্প কিছু ছিল। এমনকি সরকারিও অনেক দফতর অস্থায়ী কেবিনে চলত।' তিনি বলেন, 'আজকের দুবাই বা আবু ধাবিকে দেখলে মনে হয়, মরুভূমির বুকে এক অলৌকিক শহর দাঁড়িয়ে গেছে। এটা সম্ভব হয়েছে এই অঞ্চলের নেতৃত্ব, পরিকল্পনা, প্রযুক্তি আর এক গভীর স্বপ্নের জন্য।'

Advertisement
'ভারত ও UAE, দুই দেশ, এক ভবিষ্যত্‍,' বললেন অরুণ পুরীAroon Purie, India Today Group Chairman and Editor-in-chief
হাইলাইটস
  • '১৯৭০-এ প্রথম দুবাই এসেছিলাম, তখন চারপাশে কিছুই ছিল না'
  • 'ভারত ও ইউএই—দুটি দেশ, এক ভবিষ্যৎ'
  • শক্তিশালী অর্থনীতি, আরও শক্তিশালী বিশ্বাস

'ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (UAE) সম্পর্ক বহু বছরের, বহুস্তরীয় এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকা এক দৃঢ় বন্ধন'—দুবাইয়ে আয়োজিত প্রথম ‘India Today Indo-UAE Conclave’-এ এভাবেই দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করলেন ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এডিটর ইন চিফ অরুণ পুরী। তিনি বলেন, 'এই সম্পর্ক শুধু বাড়ছে না, আরও গভীর ও অর্থবহ হয়ে উঠছে। ভারত-সংযুক্ত আরব আমিরশাহি জোট আসলে একসময় কেবল বাণিজ্যিক ছিল, কিন্তু এখন তা পরিণত হয়েছে এক আত্মিক ও মানবিক সেতুবন্ধনে।'

'১৯৭০-এ প্রথম দুবাই এসেছিলাম, তখন চারপাশে কিছুই ছিল না'

বক্তব্যের শুরুতেই অরুণ পুরী নিজের স্মৃতিচারণায় বলেন, 'আমি প্রথম দুবাই এসেছিলাম ১৯৭০ সালে, আজ থেকে ৫৫ বছর আগে। তখন এই শহরে খুবই অল্প কিছু ছিল। এমনকি সরকারিও অনেক দফতর অস্থায়ী কেবিনে চলত।' তিনি বলেন, 'আজকের দুবাই বা আবু ধাবিকে দেখলে মনে হয়, মরুভূমির বুকে এক অলৌকিক শহর দাঁড়িয়ে গেছে। এটা সম্ভব হয়েছে এই অঞ্চলের নেতৃত্ব, পরিকল্পনা, প্রযুক্তি আর এক গভীর স্বপ্নের জন্য।'


তিনি ইউএই-এর শাসকদের এই আশ্চর্য রূপান্তরের জন্য ধন্যবাদ জানান।

'ভারত ও ইউএই—দুটি দেশ, এক ভবিষ্যৎ'

ভারত ও ইউএই-এর সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, 'এই সম্পর্কটা আর শুধু পর্যবেক্ষণের নয়, এ এক বাস্তব অংশীদারিত্বের গল্প। যা আজ শুধুই ব্যবসা নয়, বরং সংস্কৃতি, কূটনীতি ও প্রযুক্তিতেও একসঙ্গে হাঁটার প্রতিচ্ছবি।” তিনি বলেন, “ভারত-ইউএই বন্ধুত্বের গল্পটা আসলে ২১শ শতকের অন্যতম সফল কূটনৈতিক কাহিনি—যা এখনও অনেকের নজরের বাইরে।'


শক্তিশালী অর্থনীতি, আরও শক্তিশালী বিশ্বাস

অরুণ পুরী জানান, ইউএই ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, আবার ভারত ইউএই-র দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্য ৮৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। লক্ষ্য আগামী দশকে তা ১০০ বিলিয়নের ঘর ছাড়াবে। তিনি বলেন, 'Comprehensive Economic Partnership Agreement (CEPA)-এর পর দুই দেশের মধ্যে ট্যারিফ বা শুল্ক অনেকটাই কমেছে। ইউএই তাদের ৯৭% আমদানির ওপর শুল্ক তুলে দিয়েছে। ভারতও ৮০%-এর ওপর শুল্ক মাফ করেছে।' এই বিশ্বাসের জোরেই পরস্পরের মধ্যে লগ্নি, প্রযুক্তি, ফিনটেক, এআই, ক্লিন এনার্জি থেকে শুরু করে খাদ্য নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বাড়ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। গত ২৫ বছরে ভারত ইউএই থেকে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ পেয়েছে, যা ভারতীয় বাজারে ইউএই-কে সপ্তম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী করে তুলেছে।

Advertisement

'ভারত-ইউএই সম্পর্ক মানবিকও'

'এই সম্পর্কটা শুধু পরিকাঠামো বা বিনিয়োগে আটকে নেই, এর পেছনে রয়েছে এক গভীর মানবিক ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্র,' বলেন অরুণ পুরী। তিনি বলেন, 'ইউএই-তে এখন প্রায় ৩৫ লক্ষ ভারতীয় বসবাস করেন। তাঁরা শুধু অভিবাসী নন, এই দেশের উন্নয়নে তাঁদের সরাসরি অবদান রয়েছে। বলিউড এখানে জনপ্রিয়, ক্রিকেট আমাদের যুক্ত রাখে, আর ভারতীয় খাবার ছড়িয়ে আছে এখানকার রেস্তোরাঁয়।' তিনি আরও বলেন, '
'আবু ধাবিতে যেমন হিন্দু মন্দির আছে, তেমনই কেরলে রয়েছে এক হাজার বছরের পুরোনো মসজিদ। এই দুই দেশ আসলে একে অন্যের সংস্কৃতির সেরা উদাহরণ তুলে ধরে।'


'বিশ্বাস, বন্ধুত্ব আর সংলাপই এগিয়ে নিয়ে যাবে ভারত-ইউএই-কে'

বক্তব্যের শেষে অরুণ পুরী বলেন, 'আজকের বিশ্ব যেখানে বিভক্তি বাড়ছে, সেখানে এই ধরনের সম্পর্ক—যা বিশ্বাস আর বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে—বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।' তিনি বলেন, 'এই কনক্লেভের উদ্দেশ্য শুধু সাফল্য উদযাপন নয়, বরং দুই দেশের আগামী দিনের সহযোগিতার রূপরেখা তৈরি করা। আর সেই কাজে, সাংবাদিকতা, তথ্য, স্বচ্ছতা, ও আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।'
 

POST A COMMENT
Advertisement