
India Pakistan Conflict 2025: ফের মুখ পুড়ল পাকিস্তানের। কারণ এক জিও-ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞ তাদের ভুয়ো দাবি ভেঙে দেন। কিছু পাকিস্তানি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, গত মাসের চার দিনের সামরিক সংঘর্ষে তারা ভারতের আদমপুর এয়ার বেসে হামলা চালিয়েছে।
ড্যামিয়েন সাইমন জানান, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে পাকিস্তান আদমপুর (পাঞ্জাব)-এর এয়ারবেসে হামলা চালিয়ে একটি সুখোই Su-30 MKI বিমান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তবে তিনি মার্চ ২০২৫-এর একটি স্যাটেলাইট ছবি শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায় একটি MiG-29 বিমানে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে এবং ইঞ্জিন টেস্ট প্যাডের পাশে যে ধোঁয়া বা দাগ দেখা যাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পরে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পাল্টা জবাবেই পাকিস্তানের বড়সড় ক্ষতি হয়েছিল। এরপর থেকেই পাকিস্তান মিথ্যা প্রচারে নামে, যাতে ভারতের আক্রমণের বিশ্বাসযোগ্যতা খাটো করা যায়। কিন্তু তাদের প্রতিটি দাবি মুখ থুবড়ে পড়ে।
পূর্বে পাকিস্তান দাবি করেছিল, তাদের চিনে তৈরি JF-17 যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আদমপুরের রাশিয়ান তৈরি S-400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ‘সুদর্শন চক্র’ ধ্বংস করেছে। অথচ বাস্তবে এই S-400-ই পাকিস্তানি ড্রোন ও মিসাইলকে ভারতের ঘাঁটিতে ঢুকতে বাধা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী আদমপুর ঘাঁটিতে গিয়েছিলেন
S-400 ধ্বংসের দাবির প্রমাণ উড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সংঘর্ষের তিন দিন পর, ১৩ মে তিনি আদমপুর এয়ারবেসে যান এবং সৈনিকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন—পিছনে দেখা যায় সম্পূর্ণ অক্ষত MiG-29 এবং S-400 সিস্টেম। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম এয়ারবেস আদমপুরে মোদীর এই সফর ছিল পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেওয়া—জঙ্গি ঘাঁটি ও সামরিক অবস্থানের বিরুদ্ধে ভারতের হামলা আপাতত থেমেছে মাত্র, শেষ হয়নি।
আগে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক টুকরো মাটি ঘিরে দাবি করেছিল—“S-400 ধ্বংস হয়েছে!!!” স্যাটেলাইট ছবি দেখিয়ে বলেছিল, আদমপুরে ক্ষতি হয়েছে। তবে সেই ছবিতে ছিল না কোনও ক্ষতির চিহ্ন—না কোনও গর্ত, না ধ্বংসাবশেষ, না ভাঙা যন্ত্রাংশ। সোশ্যাল মিডিয়া তখনই ধরেছিল পাকিস্তানের এই ধোঁকাবাজি।
আদমপুর ঘাঁটির গুরুত্ব
ঐতিহাসিকভাবে আদমপুর এয়ারবেস পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগের যুদ্ধেও বড় ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে ১৯৬৫-র যুদ্ধে। সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত এই ঘাঁটি ভারতের উত্তরের এয়ার ডিফেন্সের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১৯৬৫-র যুদ্ধে পাকিস্তানের মূল লক্ষ্য ছিল আদমপুর, কিন্তু তারা এই ঘাঁটিতে প্রবেশই করতে পারেনি। তখন এখানে মোতায়েন ছিল Su-7 এবং MiG-21 বিমান। এখানে ছিল গুরুত্বপূর্ণ মিসাইল ও রাডার ইউনিটও। ২০২২ সালে প্রথম S-400 ইউনিট মোতায়েন হয় আদমপুরে। বর্তমানে এখানে রয়েছে ভারতের অন্যতম শক্তিশালী বিমান স্কোয়াড্রন—MiG-29 এবং Su-30 MKI সহ। এই এয়ারবেসে উন্নত রাডার ও নজরদারি ব্যবস্থা থাকায় এটি পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর, এবং রাজস্থানের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।