ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়ছে। এদিকে যুদ্ধের আশঙ্কায় আগেভাগেই খাবার, জ্বালানি মজুদ করার ছক কষছেন অনেকে। ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের ঘাটতির আশঙ্কায় অনেকেই আগেভাগে সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে, সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করল ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড (IOCL)। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, দেশজুড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণেই জ্বালানি মজুত রয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে জ্বালানি কেনার কোনও প্রয়োজন নেই।
শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ IOCL জানিয়েছে, ‘ইন্ডিয়ান অয়েলের কাছে দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে এবং আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে চলছে। আতঙ্কিত হয়ে পেট্রোল বা এলপিজি কেনার দরকার নেই। আমাদের প্রতিটি আউটলেটেই জ্বালানি সহজলভ্য।’
IOCL-এর তরফে নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে, পাম্পে অযথা ভিড় করবেন না এবং স্বাভাবিকভাবেই জ্বালানি ব্যবহার করুন। সংস্থার মতে, এই সুস্থ-সাধারণ আচরণই জ্বালানি সরবরাহ প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখবে। সকল গ্রাহক যাতে সময়মতো পেট্রোল, ডিজেল ও গ্যাস পান, তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
IOCL-এর পোস্ট
শুক্রবার IOCL-এর শেয়ার দাম পড়ে ১ শতাংশ। এই অবস্থান স্পষ্ট করার কারণ হল ভারত-পাক উত্তেজনা, যা বিশেষ করে সাম্প্রতিক ড্রোন হামলার পর বেড়েছে। ভারতের একাধিক শহরে হামলা হয়েছে বলে জানা যায়।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার তেলের দাম প্রায় ৩ শতাংশ বাড়ে। শুক্রবার সকালে আবার তেলের দাম সামান্য বৃদ্ধি পায়। ব্রেন্ট ক্রুড ২৩ সেন্ট বেড়ে প্রতি ব্যারেল দাঁড়ায় ৬৩.০৭ ডলার। অপরদিকে, ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুড ২১ সেন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৬০.১২ ডলার প্রতি ব্যারেল। এই দামের ওঠানামার পিছনে আমেরিকা ও চিনের মধ্যকার বাণিজ্য দ্বন্দ্বেরও ভূমিকা রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পেট্রোল পাম্পে লম্বা লাইনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক আরও বাড়ে। বিশেষ করে উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে গাড়িতে জ্বালানি ভরতে দেখা যায় বহু মানুষকে।
ভারতীয় বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এরপর থেকেই যুদ্ধের আশঙ্কায় অনেকেই আশঙ্কা করতে থাকেন যে সামনে জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে।
সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে পাঞ্জাবে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে। বুধবার থেকেই বহু বাসিন্দা পেট্রোল পাম্পে ভিড় করতে শুরু করেন। কেউ গাড়িতে জ্বালানি ভরেছেন, কেউ বা জ্বালানি রাখার ড্রাম নিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি অনেকেই খাবার, ওষুধ ও গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করতে শুরু করেন।
এই অবস্থায় ইন্ডিয়ান অয়েল জানিয়েছে, সংস্থার বিতরণ ব্যবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক এবং শক্তিশালী। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জ্বালানি সরবরাহে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।
পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের তরফেও কোনও রকম সতর্কতা বা নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। এই তথ্যই স্পষ্ট করছে যে গোটা দেশে জ্বালানি সরবরাহ এখনো স্থিতিশীল।