Voter Card: 'ভূতুড়ে ভোটার' বিতর্কের জের? ৩ মাসের মধ্যেই ইউনিক ভোটার কার্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের

নকল পরিচয়পত্রের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী তিন মাসের মধ্যে চালু হতে চলেছে ইউনিক ভোটার কার্ড। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে 'ভূতুড়ে ভোটার' নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। সেই প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement
'ভূতুড়ে ভোটার' বিতর্কের জের? ৩ মাসের মধ্যেই ইউনিক ভোটার কার্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের

নকল পরিচয়পত্রের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী তিন মাসের মধ্যে চালু হতে চলেছে ইউনিক ভোটার কার্ড। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে 'ভূতুড়ে ভোটার' নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। সেই প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ করতে এই বড় সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। ডুপ্লিকেট EPIC নম্বর সমস্যার সমাধান করতে কমিশন তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এর লক্ষ্য একটাই, যেন প্রতিটি ভোটারের একটিই বৈধ পরিচয় থাকে। এর ফলে ভারতীয় ভোটার ডেটাবেস আরও নির্ভুল হবে। এবার আধার কার্ডের মতোই প্রত্যেক ভোটারের ইউনিক ভোটার কার্ড নম্বর থাকবে।

বিশ্বের বৃহত্তম ভোটার তালিকা ভারতেই। এদেশে ৯৯ কোটিরও বেশি রেজিস্টার্ড ভোটার রয়েছেন। এই তালিকা নিয়মিতভাবে আপডেট করা হয়। প্রায় ৯৯ কোটি ভোটারের লিস্ট সঠিক রাখা যে মোটেও সহজ কথা নয়, তা বলাই বাহুল্য। জেলা নির্বাচন আধিকারিক (DEO) এবং নির্বাচন রেজিস্ট্রেশন আধিকারিকদের (ERO)  উপরেই কিন্তু এই কাজের চাপ সবচেয়ে বেশি। সঙ্গে জনসাধারণ এবং রাজনৈতিক দলগুলিও এতে অংশ নেয়। এর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

বিশেষ সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা (SSR) প্রক্রিয়া প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বিশেষ সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা (SSR) হয় এবং জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয় চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। নির্বাচনী রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নির্বাচনের আগে এই প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হয়। SSR 2025-এর কাজ শুরু হয় ৭ অগস্ট ২০২৪-এ এবং ৬-১০ জানুয়ারি ২০২৫-এর মধ্যে প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা।

ধাপে ধাপে পুরো প্রসেসটা জেনে নিন:

  • বুথ লেভেল অফিসার (BLO): প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে BLO-র নিয়োগ হয়, যাঁরা ভোটার তালিকার তত্ত্বাবধানে থাকেন।
  • বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA): রাজনৈতিক দলগুলি তাদের এজেন্ট নিয়োগ করে, যারা তালিকা পরীক্ষা করেন এবং ত্রুটি থাকলে রিপোর্ট করেন।
  • যাচাই ও অভিযোগ সমাধান: BLO বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করেন এবং ERO-কে রিপোর্ট দেন। পরে তা পুনঃপরীক্ষা হয়।
  • খসড়া ভোটার তালিকা: অনলাইনে খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয় এবং জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়।
  • দাবি ও আপত্তি: এক মাসের জন্য নাগরিকরা আপত্তি জানাতে পারেন। সমস্ত অভিযোগ সমাধানের পর প্রকাশিত হয় চূড়ান্ত তালিকা।
  • আপিল প্রক্রিয়া: কেউ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে চাইলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রধান নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) কাছে আবেদন করতে পারেন।

ডুপ্লিকেট EPIC নম্বর সমস্যার সমাধান নির্বাচন কমিশন জানতে পেরেছে, কিছু ভোটারের কাছে ভুলবশত ডুপ্লিকেট EPIC নম্বর চলে গেছে। ২০০০ সালে EPIC সিরিজ চালুর পর থেকে এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আলাদা ভাবে তাদের ভোটার তালিকা পরিচালনা করত, যার ফলে এই ত্রুটি নজর এড়িয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

সম্প্রতি কমিশনের তদন্তে দেখা যায়, ১০০-রও বেশি বৈধ ভোটারের কাছে ডুপ্লিকেট EPIC নম্বর রয়েছে। যদিও প্রত্যেক ভোটারকে নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রেই ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন প্রধান নির্বাচন আধিকারিক (CEO) এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী তিন মাসের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সমস্ত ভোটারকে ইউনিক EPIC নম্বর দেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ত্রুটি আর না ঘটে।

POST A COMMENT
Advertisement