২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ৪৮ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। মেলা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের স্টল নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না। কারণ বিদেশি দেশের স্টলের তালিকায় তাদের নাম নেই। যদিও এনিয়ে পরিষ্কার করে কিছু জানালেন না পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়। এই বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,'আমরা বলতে পারব না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সরকারি নির্দেশের অপেক্ষাতে রয়েছি। যে পরিস্থিতির মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ রয়েছে। তাতে সরকারি কোনও নির্দেশ ছাড়া আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। নির্দেশ এখনও আসেনি।'
প্রতি বছরের মতো এবারও সটলেকের সেন্ট্রাল পার্কে অনুষ্ঠিত হবে ৪৮ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। এবার থিম কান্ট্রি জার্মানি। তারই লোগে উদ্বোধন হয়েছে শুক্রবার। উপস্থিত ছিলেন গিল্ডের কর্তারা। এবার বইমেলাতে আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, পেরু, আর্জেন্টিনা কলম্বিয়া, লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের বই থাকছে। ভারতের অন্যান্য রাজ্য যেমন দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাত ,মহারাষ্ট্র, বিহার, অসম, তেলঙ্গনা, কেরল সহ অন্যান্য রাজ্যের প্রকাশরাও তাদের বইয়ের ঝুলি নিয়ে থাকবেন।
তবে, এবার বাংলাদেশের প্রকাশকরা থাকবেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত রয়েছে। গতবছর এই বইমেলা থেকে বাংলাদেশ কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছিল। এবছর তাদের নামই নেই এখনও পর্যন্ত। গিল্ডের রফে জানানো হয়েছে, স্টলের সংখ্যা বাড়ছে না। প্রচুর প্রকাশক আবেদন করলেও তাঁদের স্টল দেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রায় ১৩০০ নতুন স্টলের আবেদন ছিল। ১০৫০ জনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পরেই আওয়ামি লিগ সরকারের পতন ঘটে। তারপরে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয় বাংলাদেশে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার চলছে। বাংলাদেশে পুরোপুরি শান্ত বলা যাবে না, এখনও বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তি লেগেই আছে। এই প্রেক্ষাপটে কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের অংশ নেওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা প্রথম থেকেই ছিল। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে গিল্ডের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে উল্লেখ করা হয় বইমেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রকাশক, পুস্তক বিক্রেতা, লিটল ম্যাগাজিন বিভাগকে তাদের নিজস্ব লেটার হেডে দরখাস্ত করতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে নাম, ঠিকানা, স্টল বা টেবিলের মাপ, মেলার সকল নিয়মবিধি মেনে চলার সম্মতিপত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ অক্টোবর। প্রায় এক হাজার তিনশো আবেদনপত্র জমা পড়ে। গতবারের থেকে কিছুটা বেশি।
এবারের আবেদনের তালিকায় নাম ছিল না বাংলাদেশের প্রকাশকদের। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকেও কোনও আবেদনপত্র আসেনি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিন্ডের কাছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে ২০২৫ সালের বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন কি থাকছে না? তবে এই নিয়ে এখনই পরিষ্কার করে কোনও মন্তব্য করতে চান না গিল্ড কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় গিল্ড।