মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ঘোষণা করেছেন যে, চার মাসেরও বেশি সময় ধরে জাতিগত সহিংসতায় জড়িয়ে থাকা রাজ্যে আজ থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে চালু করা হবে। তিনি বলেছেন, "আমি মণিপুরের জনগণকে জানাতে চাই যে রাজ্য সরকার অপ্রীতিকর ঘটনা রোধ করার জন্য ইন্টারনেটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। আজ থেকে, জনসাধারণের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করা হবে।"
২৫ জুলাই মণিপুরে ব্রডব্যান্ড পরিষেবাগুলি নির্দিষ্ট শর্তাবলী এবং ব্যবহারকারীদের দ্বারা স্বাক্ষর করার একটি অঙ্গীকারের সঙ্গে পুনরায় চালু করা হয়েছিল। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগ একটি আদেশে বলেছে। তখনও মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল।
আদেশে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা পর্যালোচনা করার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য সুবিধা এবং অনলাইন নাগরিক-কেন্দ্রিক পরিষেবা-সহ বিভিন্ন খাতকে প্রভাবিত করেছিল।
মে মাসে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘু কুকি উপজাতির মধ্যে জাতিগত সংঘাত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য সরকার ইন্টারনেট বন্ধের সূচনা করেছিল।
৩ মে থেকে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং কয়েক শতাধিক আহত হয়েছে, যখন মণিপুরের পার্বত্য জেলাগুলিতে মেইতি সম্প্রদায়ের তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদার দাবির প্রতিবাদে একটি "উপজাতি সংহতি মার্চ" সংগঠিত হয়েছিল।
Meiteis রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ এবং বেশিরভাগ ইম্ফল উপত্যকায় বাস করে। নাগা এবং কুকি সহ উপজাতীয়রা ৪০ শতাংশ এবং বেশিরভাগই পার্বত্য জেলায় বসবাস করে। এদিন মণিপুর সরকার এক নির্দেশিকা জারি করে জানায়, ব্রডব্যান্ড থেকে সাসপেশন শর্তসাপেক্ষে তোলা হচ্ছে। তবে বন্ধ থাকবে মোবাইল ইন্টারনেট। একমাত্র স্ট্যাটিক আইপি ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহার যাবে। তবে সেখান থেকে ওয়াইফাই বা হটস্পট ব্যবহার করতে পারবে না কেউ। সেইসঙ্গে স্যোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ইন্টারনেট না থাকায় চরম সমস্যায় পড়েছিল বিভিন্ন সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যদপ্তর। যারা ঘর থেকে কাজ করেন তারাও পড়েছিলেন অসুবিধেয়।
মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে গতকাল সংসদের বাইরে মুখ খুলেছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, মণিপুরে যদি সব ঠিক থাকে তবে কেন প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করছেন না? অভিষেকের এই মন্তব্যের পরই কি সত্যি চালু হল ইন্টারনেট পরিষেবা। উঠছে প্রশ্ন।