ভারতের পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তানি জঙ্গি জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ জন সদস্য নিহত হয়েছে। এছাড়াও নিহত হয়েছে আরও ৪ জন সহযোগী। মাসুদ আজহার নিজেই পরিবারের এতজনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে মাসুদ আজহারের বড় বোন এবং তার স্বামী, মাসুদ আজহারের ভাগ্নে, তার স্ত্রী, আরেক ভাগ্নী এবং পরিবারের পাঁচ সন্তান। এছাড়াও কয়েকজন আহত হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, মঙ্গলবার রাতে হামলায় মাসুদ আজহারের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তার মা, আরও দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিহত হয়েছেন। এই হামলার পর দুঃখী মাসুদ আজহার বলেছে, 'এই হামলায় আমিও মরে গেলে ভাল হত।'
গত রাতে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী পহেলগাঁও হামলার বদলা নিয়েছে। অপারেশন সিঁদুরের অধীনে পাকিস্তানের গভীরে জঙ্গি শিবিরগুলিকে টার্গেট করে মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে। হামলা চালাতে ভারতের পছন্দের অস্ত্র ছিল স্ক্যাল্প ক্রুজ মিসাইল এবং হ্যামার প্রিসিশন-গাইডেড বোমা। এই দুটিই রাফাল যুদ্ধবিমানে সজ্জিত ছিল বলে সূত্র জানিয়েছে। মধ্যরাতের কিছুক্ষণ পরেই পাকিস্তানের ৯টি স্থানে মিসাইল বৃষ্টি করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তইবার শক্ত ঘাঁটি বাহাওয়ালপুর এবং মুরিদকে। বিমান বাহিনী ছাড়া ভারতের নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীও এই অভিযানে জড়িত ছিল।
ভারতের অপারেশন সিঁদুরের বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠকে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৬-৭ মে ২০২৫ তারিখে রাত ১.০৫ থেকে ১.৩০ এর মধ্যে 'অপারেশন সিঁদুর' পরিচালনা করে। তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার শিকার নিরীহ সাধারণ নাগরিক এবং তাদের পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্যই এই অপারেশন চালানো হয়েছিল। এই অভিযানে সামরিক ঘাঁটি বা সাধারণ মানুষকে টার্গেট করা হয়নি। মোট ৯টি জঙ্গি শিবির টার্গেট করা হয়েছিল এবং সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছিল।
কৌশলগত ভাবেই অপারেশন সিঁদুররে জন্য স্ক্যাল্প ক্রুজ মিসাইল এবং হ্যামার প্রিসিশন-গাইডেড বোমা বেছে নেওয়া হয়েছিল। যাতে নির্দিষ্ট জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতেই হামলা করা যায়। কোনও সাধারণ নাগরিক যাতে হতাহত না হয় সেটাও মাথায় রাখা হয়েছিল। ২০১৯ সালে বালাকোট বিমান হামলার সময় ভারত জঙ্গি লঞ্চপ্যাডগুলিতে আক্রমণ করার জন্য পুরনো মিরাজ ২০০০ জেট ব্যবহার করা হয়েছিল।