ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে রাজ্যটিতে। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বিজেপির উপর তীব্র আক্রমণ শুরু করেছেন এবং এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইস্যুও নিয়ে এসেছেন। গাড়োয়া বিধানসভা আসনের রাঙ্কায় একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) এর কার্যকরী সভাপতি বলেছেন যে বিজেপি নেতাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে "দ্বৈত ভূমিকা" রয়েছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন কেন্দ্র বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার পর ভারতে আশ্রয় নিতে দিল। সোরেন বলেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদী শপথ নেওয়ার সময় সংবিধানের সামনে মাথা নত করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে এবং সমাজের সব অংশ সমান অধিকার পাবে, তাই আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা করেছেন কি না? আমি আপনার কাছে জানতে চাই আপনি কেন শেখ হাসিনার হেলিকপ্টারকে এখানে নামতে দিলেন? কীসের ভিত্তিতে আপনি তাকে আশ্রয় দিয়েছেন?'
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাঁচিতে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার একদিন পরে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এমন মন্তব্য করেছেনষ শাহ জেএমএম-এর নেতৃত্বাধীন সোরেন সরকারকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। অমিত শাহ দাবি করেছিলেন যে ঝাড়খণ্ডে উপজাতি জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং রাজ্যটির জনসংখ্যা দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে।
অমিত শাহকে নিশানা করলেন সিএম সোরেন
অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে বিজেপি যদি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে, তবে তারা ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকে জমি ফিরিয়ে নিতে এবং তাদের বিতাড়িত করার জন্য কঠোর আইন তৈরি করবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যকে লক্ষ্য করে, সিএম সোরেন প্রশ্ন তোলেন কেন ঝাড়খণ্ডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশকে দেয়।
প্রশ্ন তুলেছেন সিএম সোরেন
তিনি বলেন, ঝাড়খণ্ডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশকে দেওয়া হচ্ছে, অথচ রাজ্যের মানুষকে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সীমান্ত রক্ষা ও অনুপ্রবেশ ঠেকানো কি কেন্দ্রের দায়িত্ব নয়? এতে রাজ্য সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। আপনার (বিজেপি) শাসিত রাজ্য থেকে অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে প্রবেশ করে, আপনি সেখানে অনুপ্রবেশ বন্ধ করেন না কেন? সিএম সোরেন বলেছেন যে তারা (বিজেপি) নিজেরাই স্বীকার করেছে যে তাদের রাজ্যে অনুপ্রবেশ ঘটে, তবুও তারা ঝাড়খণ্ডকে দায়ি করে।
ঝাড়খণ্ডে ২ দফায় ভোট হবে
প্রসঙ্গত ৮১-সদস্যের ঝাড়খণ্ড বিধানসভার জন্য ১৩ ও ২০ নভেম্বর দুটি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ২৩ নভেম্বর ভোট গণনা হবে। ক্ষমতাসীন জেএমএম বিরোধীদের ইন্ডিয়া ব্লকের অংশ হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, যারা ৪৩ টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেসকে ৩০টি আসন দেওয়া হয়েছে, আর লালু প্রসাদের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এছাড়া ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিকে (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) ৪টি আসন দেওয়া হয়েছে।