scorecardresearch
 

Jharkhand election results: ঝাড়খণ্ডে 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার' জাদুতেই ফের মসনদে হেমন্ত? ব্যাপক জয়ের ৫ কারণ

ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোট আবারাও সরকার গঠনের পথে। বিজেপি হারতে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে। ইন্ডিয়া জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অতিক্রম করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই জোটের মধ্যে ব্যবধান অনেকটাই বেড়েছে।

Advertisement
ঝাড়খণ্ডের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জাদুতেই কি ফের মসনদে হেমন্ত? রইল সাফল্যের ৫ কারণ ঝাড়খণ্ডের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জাদুতেই কি ফের মসনদে হেমন্ত? রইল সাফল্যের ৫ কারণ
হাইলাইটস
  • ঝাড়খণ্ডের মুসলিম এবং যাদব অধ্যুষিত আসনে ইন্ডিয়া জোট সাফল্য পেয়েছে
  • আদিবাসী অধ্যুষিত আসনে হেমন্ত সোরেনের আধিপত্য

ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোট আবারাও সরকার গঠনের পথে। বিজেপি হারতে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে। ইন্ডিয়া জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অতিক্রম করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই জোটের মধ্যে ব্যবধান অনেকটাই বেড়েছে। হেমন্ত সোরেন যদি আবার সরকার গঠনে সফল হন, তবে এটি হবে তাঁর জন্য একটি বড় অর্জন এবং এটি তাঁর রাজনৈতিক মর্যাদাও বৃদ্ধি করবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ঝাড়খণ্ডে ইন্ডিয়া জোটের জয়ের প্রধান কারণগুলি কী কী?

আদিবাসী অধ্যুষিত আসনে হেমন্ত সোরেনের আধিপত্য

ঝাড়খণ্ডে উপজাতি জনসংখ্যা ২৬ শতাংশর বেশি, অনেক বিধানসভা আসনে আদিবাসীদের সংখ্যা ৪০ শতাংশের বেশি। এই নির্বাচনের ফলাফল দেখায় যে আদিবাসীরা আবারও হেমন্ত সোরেনের প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন। আসলে হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো বড় কোনও আদিবাসী নেতা বিজেপির নেই। চম্পাই সোরেন হয়তো জেএমএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, এই ছাড়াও হেমন্ত সোরেনের ভগ্নিপতি সীতা সোরেনও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু আদিবাসীরা তাঁদের পছন্দ করেননি। হেমন্ত সোরেনের দলকে সেইসব আসনে অসাধারণ সাফল্য পেতে দেখা যাচ্ছে যেখানে আদিবাসীদের সংখ্যা বেশি।

মুসলিম-যাদব এবং উপজাতি আসনগুলিতে বাম্পার জয়

আদিবাসী ছাড়াও, ঝাড়খণ্ডের মুসলিম এবং যাদব অধ্যুষিত আসনে ইন্ডিয়া জোট সাফল্য পেয়েছে বলেই মনে হচ্ছে৷ ঝাড়খণ্ডে এমন ১০টিরও বেশি আসন রয়েছে, যেখানে তাদের জনসংখ্যা ৫০ শতাংশেরও বেশি, এসব আসনে এই মুহূর্তে ইন্ডিয়া জোট লিড নিয়েছে। এছাড়াও, ঝাড়খণ্ডে বিজেপির অনেক নেতা স্লোগান দিয়েছিলেন 'আমরা যদি ভাগ হই তবে আমরা আলাদ হব', কিন্তু মেরুকরণ হয়নি। এখানে 'হিন্দু-মুসলিম'-এর চেয়ে উপজাতি পরিচয়টাই বেশি খেলা হয়েছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টিও প্রচারে তুলেছিল বিজেপি। কিন্তু হেমন্ত সোরেন বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে 'বেটি-মাটি-রোটি' স্লোগান দিয়েছিলেন, তাতে কাজ হয়েছে।

Advertisement

বিজেপির জন্য হেমন্ত সোরেনের কারাদণ্ড

ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে ৩১ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ৮.৮৬ একর জমি বেআইনিভাবে অধিগ্রহণের অভিযোগে জেলে যেতে হয়েছিল৷ তিনি এটিকে উপজাতি পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। তিনি এই কথাটি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন যে বিজেপি একটি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে গরিবদের নেতা হেমন্ত সোরেনকে জেলে পাঠিয়েছে। জনগণকে নির্বাচনে ভোট দিয়ে এর প্রতিশোধ নিতে হবে। কিছুটা হলেও, তিনি আদিবাসী সহ বৃহৎ জনসংখ্যাকে বলতে সফল হয়েছিলেন যে তিনি কোনও কেলেঙ্কারি করেননি এবং এটি সবই বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতি।

হেমন্ত সোরেন যখন জেলে ছিলেন তখন কল্পনা সোরেন দায়িত্ব নেন

হেমন্ত জেলে গেলে চম্পাই সোরেনকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল, কিন্তু সরকারের লাগাম ছিল হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেনের হাতে। কল্পনা সোরেন মাঠে নেমে দলকে সক্রিয় করতে ব্যস্ত ছিলেন, তিনি সর্বত্র হেমন্ত সোরেনের জেলে যাওয়াকে অন্যায় বলে প্রচার করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি তাঁর মতামত তুলে ধরেন ভিন্ন স্টাইলে। বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও তিনি জোরদার প্রচার করেছিলেন। তাঁকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে এবং ভোটাররা তাঁর কথা মেনেছে বলেই মনে হচ্ছে।

ঝাড়খণ্ডে মাইয়া যোজনার জাদু

হেমন্ত সোরেন সরকারের মাইয়া যোজনার জাদু ঝাড়খণ্ডে কাজ করেছে। মাইয়া যোজনার অধীনে, ঝাড়খণ্ডে ৫১ লক্ষেরও বেশি মহিলাকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের মহিলাদের প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এখানে বিজেপি নির্বাচনে মহিলাদের প্রতি মাসে ২১০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়েছিল। কিন্তু জনসাধারণ হেমন্ত সোরেনের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস প্রকাশ করেছে, কারণ মহিলাদের অনেক কিস্তি দেওয়া হয়েছে। আর্থিক সাহায্যের পর বিশেষ করে আদিবাসী মহিলারা খোলাখুলিভাবে হেমন্ত সোরেনকে সমর্থন করেছেন।

ঝাড়খণ্ডে মোট ৮১টি বিধানসভা আসন রয়েছে, যার মধ্যে ইন্ডিয়া জোট ৪৮টি আসনে সাফল্য পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, যেখানে NDA বর্তমানে ৩১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে সরকার গঠনের জন্য ৪১টি আসনের প্রয়োজন হবে এবং ইন্ডিয়া জোট ৪৮টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

Advertisement