পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রকে অপহরণ করে খুন! দেহ কুয়োয় ফেলে দেওয়ার পর পরিবারের কাছ থেকে দাবি করা হল ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কানপুরের বিলহোরে। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পদক্ষেপ করল পুলিশ। মোবাইল লোকেশনের দেখে এক অভিযুক্ত নজর আলি ওরফে হুসেনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য অভিযুক্ত আজহার ওরফে আজ্জু পলাতক।
'রমজান মাসে স্ত্রী সহবাস করছিলেন না'
পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত হুসেন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, রমজান মাসে রোজার কারণে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাননি স্ত্রী। সেজন্য বন্ধুর সঙ্গে গ্রামের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে অপহরণের ষড়যন্ত্র করে। অভিযুক্তের উদ্দেশ্য ছিল, তাকে ধর্ষণ করা এবং মুক্তিপণের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন।
যেভাবে ঘটেছিল অপরাধ
ওই কিশোরকে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিল দুই অভিযুক্ত। তারা জানত, রোজ সন্ধ্যায় সে জিমে যায়। জিম থেকে ফেরার সময় তাকে ফুঁসলিয়ে গ্রাম থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে দড়ি ও রড রেখে দিয়েছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা দুজনেই নাবালিকা ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। তাকে ধর্ষণ করে দুজনেই। মুখে কাপড় গুঁজে দিয়েছিল। নির্যাতনের জেরে সেই নাবালক সংজ্ঞা হারায়। এরপর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে অভিযুক্তরা। মৃতদেহটি কুয়োয় ফেলে দেওয়ার পর তারা পরিবারের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অভিযুক্ত কীভাবে ধরা পড়ল?
৬ মার্চ সকালে নাবালকের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে ফোনে একটি মেসেজ পাঠানো হয়। তাতে লেখা ছিল,'তোমার ভাই আমাদের সঙ্গে আছে।' তাকে জীবিত চাইলে বিকেল ৫টার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। পুলিশকে খবর দিলে, মেরে ফেলব'। পরিবারের লোকেরা প্রথমে মেসেজটি দেখেননি। কোনও সাড়া না পাওয়ায় অভিযুক্ত হুসেন নিজেই পরিবারকে শিশুটির ফোন চেক করতে বলেন। তদন্তে পুলিশকে জানতে পারে, অভিযুক্ত হুসেনের ফোন নম্বর থেকে বার্তাটি পাঠানো হয়েছিল। তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তল্লাশির সময় তার পকেট থেকে নাবালকের বন্ধ মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুরো ঘটনার কথা স্বীকার করে।
পলাতক অভিযুক্তের খোঁজ
পলাতক অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে,আজহার ওরফে আজ্জু পলাতক। তাঁর খোঁজে পুলিশের দল অভিযান চালাচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চলের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বিজেন্দ্র দ্বিবেদী জানান, হত্যাকাণ্ডে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাড়াতাড়ি অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।