মুনাম্বামে 'ঐতিহাসিক জয়' BJP-র২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেমি-ফাইনালে খেলা ঘুরল বাম শাসিত কেরলে। স্থানীয় ভোটে উত্থান হল কংগ্রেসের। দীর্ঘদিন ধরে সরকারে থাকা বামেরাও অবশ্য লড়াই করছে। একাধিক কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে LDF, আবার কোথাও আধিপত্য দেখাচ্ছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন UDF। তবে, এই ভোট বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ BJP-র জন্যও।
কেরলের এর্নাকুলাম জেলার মুনাম্বামে জয় পেয়েছে NDA জোট। BJP কেরলের জেনারেল সেক্রেটারি অনুপ অ্যান্টনি জোসেফ মুনাম্বাম ওয়ার্ডে এনডিএ-র জয়কে 'ঐতিহাসিক' বলে দাবি করে জানিয়েছেন, "ওয়াকফ বোর্ডের অবৈধ দাবির কারণে মুনাম্বামের প্রায় ৫০০ খ্রিস্টান পরিবার তাঁদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদের হুমকির মুখে পড়েছিলেন। বিজেপি তখন থেকেই এই পরিবারগুলিকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে এসেছে। এদিন ভোট গণনায় সেই প্রভাবই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।"
মুনাম্বামের জয়কে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের সমর্থনের লক্ষণ হিসেবে দেখছে পদ্ম শিবির। আগের নির্বাচনে এই ওয়ার্ডটি কংগ্রেসের হাতে ছিল। তবে, বিজেপির এই জয়ের ফলে ২০২৬ সালের কেরল বিধানসভা নির্বাচনের আগে NDA-র শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গোটা বিষয়টিকেই এখন এই পুরো বিষয়টিকেই 'ন্যায়বিচার বনাম অন্যায়ের' লড়াই হিসেবে তুলে আনছেন বিজেপি নেতারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, মুনাম্বামের এই জয় কেরলের খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের মধ্যে বিজেপির প্রতি ক্রমবর্ধমান ভরসারই প্রতিফলন।খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মুনাম্বামে কী হয়েছিল?
মুনাম্বাম ওয়াকফ বিরোধের শিকড় প্রায় সাত দশক পুরনো। ১৯৫০ সালে সিদ্দিকী সাইত নামে এক ব্যক্তি এই জমিটি ফরিদ কলেজকে দান করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে, কলেজ প্রশাসন জমির কিছু অংশ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বিক্রি করে দেয়। যদিও এই এলাকায় আগে থেকেই লোকেরা বাস করত। ২০১৯ সালে, কেরালা ওয়াকফ বোর্ড পুরো জমিটিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে রেজিস্টার করে এবং আগের সমস্ত লেনদেন বাতিল করে। এর ফলে কয়েকশো পরিবার উচ্ছেদের হুমকির সম্মুখীন হয়।
৪১০টি পরিবার উচ্ছেদের আশঙ্কায় ছিল
পুরো জমিটি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে রেজিস্টার হওয়ার ফলে মুনাম্বাম এবং চেরাই এলাকায় বহু মানুষ উচ্ছেদের আশঙ্কায় ভুগতে থাকেন। ক্ষতির আশঙ্কায় পরিবারগুলি কোঝিকোড় ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালে এটিকে চ্যালেঞ্জ করে। রাজ্য সরকার জমির মালিকানা তদন্তের জন্য সিএন রামচন্দ্রন নায়ার কমিশন গঠন করে। ২০২৫ সালে, কেরালা হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চ কমিশনটিকে বাতিল করে দেয়, কিন্তু পরে একটি ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনটিকে পুনর্বহাল করে বলে যে ২০১৯ সালের ওয়াকফ রেজিস্ট্রেশন 'আইন অনুসারে হয়নি।' পরে সুপ্রিম কোর্ট ২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকেও স্থগিত করে। ফলে বর্তমানে পরিবারগুলির উচ্ছেদ সাময়িক ভাবে রোধ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও ইতিমধ্যেই আশ্বস্ত করেছেন, যে কাউকে জোর করে উচ্ছেদ করা হবে না।