ভারী বর্ষণে কেরালের ওয়েনাড জেলায় ব্যাপক ভূমিধস হয়েছে। এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ২৫৬ জন মারা গেছে, যখন শত শত আহত এবং অনেকে এখনও আটকা পড়েছ রয়েছেন । ভূমিধসে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপড়ে গেছে অনেক গাছপালা। নিখোঁজদের সন্ধান ও উদ্ধারে সম্ভাব্য সব ধরনের তৎপরতা চলছে।
কেরলের ৮ নদীর জন্য কমলা সতর্কতা জারি
কেন্দ্রীয় জল কমিশন কাবানি, কাদালুন্ডি, ভরথাপুঝা, পুলানথোডু, গায়থ্রি, কেচেরি, কারুভান্নুর এবং থুদুপুঝা সহ ৮টি নদীর জন্য 'অরেঞ্জ' সতর্কতা জারি করেছে। কমিশন জানিয়েছে, সব নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধ্বংসাবশেষের নীচে চাপা পড়া লোকদের জন্য অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে
সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, এনডিআরএফ, পুলিশ এবং ফায়ার ব্রিগেড-সহ উদ্ধারকারী দলগুলি খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার জন্য একসঙ্গে কাজ করছে। কায়াকিং, কোরাকল বোটিং এবং ট্রেকিংয়ের মতো পর্যটন কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগামী সোমবার পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ থাকবে।
আবারও ওয়েনাড়ে বৃষ্টির জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। বিপর্যয় মোকাবিলা দল আবারও কিছু জায়গায় ভূমিধসের সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে। ড্রোন, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, স্নিফার ডগ দিয়ে চলছে উদ্ধার অভিযান। ভারী বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে। সারারাত কাজ করেও বেইলি ব্রিজের কাজ শেষ করতে পারেনি সেনাবাহিনী। বর্তমানে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আজ দুপুরের আগেই সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে বলে আশা করছে সেনাবাহিনী।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা
এদিকে রাহুল গান্ধী আজ ওয়েনাড যাবেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করবেন। রাহুল ওয়ানাড এবং রায়বেরেলি থেকে লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন। তিনি ওয়ানাড আসন ছেড়ে দেন। এখন ওয়ানাড থেকে নির্বাচনে লড়তে চলেছেন প্রিয়াঙ্কা। এর আগে উভয় নেতাই বুধবার ওয়ানাদে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাদের কর্মসূচি স্থগিত করতে হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার সংসদে বলেছেন - কেরল সরকারকে ২৩-২৪ জুলাই সতর্ক করা হয়েছিল, সরকার যদি সময়মতো লোকদের সরিয়ে দিত তবে এত ক্ষতি হত না। এই বিষয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেছেন- যখন এরকম কিছু ঘটে, তখন আপনি অন্যকে দোষ দিয়ে দায় এড়াতে পারবেন না। ট্র্যাজেডির আগে একবারও রেড অ্যালার্ট জারি করেনি আইএমডি।
৬ বছর আগে কেরালায় বন্যায় ৪৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল
এর আগে, ২০১৮ সালের অগাস্টে কেরলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৪৮৩ জন মারা গিয়েছিল। এই দুর্যোগকে রাজ্যের 'শতাব্দীর বন্যা' বলা হয়। ট্র্যাজেডিতে শুধু মানুষই প্রাণ হারায়নি, সম্পদ ও জীবিকাও ধ্বংস হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৮ সালের বন্যাকে 'গুরুতর প্রকৃতির বিপর্যয়' হিসাবে ঘোষণা করেছিল। এই দুর্ঘটনার পরে, ৩.৯১ লক্ষ পরিবারের ১৪.৫০ লক্ষেরও বেশি লোককে ত্রাণ শিবিরে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। মোট ৫৭,০০০ হেক্টর কৃষি ফসল ধ্বংস হয়েছিল।