BMW গাড়ি, সোনা, জমি সব চায়। তবেই বিয়ে করবেন। দাবি করেছিল প্রেমিক। সেই দাবি মেটাতে পারেনি যুবতীর বাড়ির সদস্যরা। এর জেরে প্রেমিকের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে। আর সেই মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী ডাক্তার যুবতী। ঘটনা কেরলের তিরুবনন্তপুরমের। সুইসাইড নোটে তাঁর মৃত্যুর জন্য প্রেমিককেই দায়ি করেছেন ওই যুবতী। মৃতা ও অভিযুক্ত যুবক দুজনেই পেশায় ডাক্তার। মৃত্যুর আগে যুবতী লিখে যান, 'এই পৃথিবীতে ভালোবাসার কোনও দাম নেই। সবটাই টাকার জন্য।'
তিরুবনন্তপুরম মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন শাহনা। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করছিলেন। যুবতীর পরিবারের অভিযোগ, শাহানাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার প্রেমিক ডাঃ ইএ রুওয়াইসের। কিন্তু মেয়ের বাড়ি থেকে দাবি মতো যৌতুক দিতে না যুবতী আত্মহত্যা করেন। ঘটনায় পুলিশ প্রেমিকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও পণ বিরোধী আইনে মামলা রুজু করেছে। তরুণীর পরিবারের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ।
শাহনা তিরুবনন্তপুরম জেলার ভেঞ্জারমুদ মৈত্রী নগরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর বাবা মারা গেছেন। আলাপ্পুঝা সরকার টিডি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেন তিনি। তারপর তিরুবনন্তপুরম মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন। আব্দুল আজিজের মৃত্যুর পর পরিবারে চরম আর্থিক সংকট দেখা দেয়। বাবা মারা যাওয়ার আগেই প্রেমিককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যুবতী। তখন থেকেই যৌতুক দাবি করতে থাকে ইএ রুওয়াইসে পরিবারের সদস্যরা।
যুবতীর পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের জন্য ঘর রং করা হয়েছিল। সব ঠিক ছিল। হঠাৎ যৌতুক দাবি করে ছেলের বাড়ির থেকে। শাহনার পরিবারের পক্ষে তা বহন করা সম্ভব হয়নি। আরও অভিযোগ, শাহনার পরিবারের উপর যৌতুক নিয়ে চাপ দিচ্ছিল ছেলের বাড়ি। একটা বিএমডব্লিউ গাড়ি, সোনা ও জমি দাবি করে। যৌতুক দিতে পারবে না বুঝতে পেরে ওই যুবক বিয়ে থেকে সরে দাঁড়ায়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, ওই যুবক শাহনাকে জানিয়েছিল, তার পরিবারের লোকজন এই বিয়েতে রাজি নয়। এরপর থেকেই মানসিক যন্ত্রণায় পড়েন যুবতী। পরিবারের সদস্যদের দাবি, কয়েকদিন ধরে কারও সঙ্গেই কথা বলছিল না শাহনা। তারপরই আত্মহত্যা।
পুলিশ একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে। সেটি শাহনা লিখেছেন বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান। সেই নোটে লেখা, 'বাবা চলে গেছে। আমি অসহায়। আমার হয়ে যৌতুক দেওয়ার কেউ নেই। এই পৃথিবীতে ভালোবাসার কোনও দাম নেই। সবটাই টাকার জন্য।'