সংসদ অধিবেশনে বিরোধীদের বিশৃঙ্খলা নিয়ে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবারও অধিকাংশ দিনই সংসদে অধিবেশন স্থগিত কিংবা বাতিল ঘোষিত হয়েছিল হট্টোগোলের কারণে। এই নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তাঁর দাবি, কলকাতা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, সেই অনুযায়ী হইচই শুরু করে দেন তৃণমূল সাংসদরা।
বাদল অধিবেশনে বিহারের SIR, ট্রাম্পের শুল্ক, প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণ এবং সর্বোপরি ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তার মতো একাধিক ইস্যুতে নিয়মিত বিক্ষোভ দেখিয়েছেন INDIA জোটের সাংসদরা। সেই বিক্ষোভে কংগ্রেসকে ছাপিয়ে তৃণমূলই নেতৃত্ব দিয়েছে, তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন কিরেণ রিজিজু।
সংসদে বিশৃঙ্খলার জন্য প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের থেকে বেশি দায়ী তৃণমূলই। সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 'আমি অশান্তির জন্য কংগ্রেস সাংসদদের দোষ দিতে চাই না। তাঁরা তাঁদের দলনেতার নির্দেশ মেনে কাজ করেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস কাজ করে কলকাতা থেকে যে নির্দেশ আসে তা মেনে।' এরপরই সরাসরি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নাম তুলে কিরেণ রিজিজু বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে নির্দেশ দিলে সেটা মানতে সাংসদরা বাধ্য হন। ওঁরা হয়তো নিজেরা এক কথা বলেন, কিন্তু অন্যরকম কাজ করতে বাধ্য হন। এখানে বিশৃঙ্খলা করতে বাধ্য হন।'
প্রসঙ্গত, গত বুধবার লোকসভায় ৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার মধ্যে ছিল ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল ২০২৫। প্রস্তাবিত ওই বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীপদে আসীন অবস্থায় কেউ যদি গুরুতর অপরাধে ৩০ দিনের বেশি জেলে থাকেন তাহলে তাঁকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে।বিরোধী শিবির বিলটির বিরোধিতা করেছে। বুধবার শাহের বিল পেশের সঙ্গে সঙ্গে তুমুল হট্টগোল শুরু করে বিরোধী শিবির। ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন তৃণমূল সাংসদরা। ছিঁড়ে ফেলা হয় বিলের কপি। ছুঁড়ে ফেলা হয় অমিত শাহের দিকে। তৃণমূলের দেখাদেখি অন্য বিরোধী সাংসদরা আসরে নামেন।
এখানেই কিরেণ রিজিজুর দাবি, ', আগে থেকেই আলোচনায় ঠিক হয়েছিল অমিত শাহ যখন সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করবেন তখন কেউ ওয়েলে নামবে না। গোটা সদন শান্ত রাখা হবে। তৃণমূলও তাতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু পরে মমতার নির্দেশে সিদ্ধান্ত বদল হয়।'