পাথুরে বাঙ্কার। তার গায়ে হেলান দিয়ে রাখা একটি মেশিনগান। তার গা বেয়ে সর্পিল আকারে বেরিয়ে এসেছে কার্তুজের সারি। দুই জন রুক্ষ চেহারার যুবক বসে। উপরে ক্যাপশন 'ফ্রেন্ড ভাই লোগ'।
এমন একাধিক সন্দেহজনক যুবকদের ছবি পোস্ট করেছেন রানা বিশ্বাস নামের এক যুবক। তাঁর ফেসবুকের স্টোরিতে কখনও 'পাকিস্তানি ভাইয়া'র সঙ্গে সেলফি। কখনও বন্দুক নিয়ে রুক্ষ পাহাড়ি প্রান্তরে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকের ছবি দিয়ে লেখা 'আমার বন্ধু'। রানা বিশ্বাসের এই অতি সন্দেহজনক বন্ধুত্বই নজরে এল পুলিশের।
সূত্রের খবর, এই রানা বিশ্বাসের বাড়ি কৃষ্ণনগরে। বছর তিনেক আগে প্রেমঘটিত কোনও কারণে তাঁকে গ্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। এরপরেই কাতারে কাজের উদ্দেশে যায় ওই যুবক। জানা গিয়েছে সম্প্রতি দেশে ফেরে সে। এরপর মুম্বইয়ে এক আত্মীয়ের হোটেলে কাজ করছে।
শনিবার কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় এই যুবকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়। আজতককে এক পুলিশ আধিকারিক জানান, রানা বিশ্বাসের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিগুলির বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। যুবকের বাবা-মাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বন্দুকধারী ব্যক্তিরা কারা, তাদের সঙ্গে রানার বন্ধুত্বই বা কেমন, তার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, সম্ভবত বিদেশে কাজ করতে গিয়েই এই বন্দুকধারীদের সঙ্গে আলাপ হয় রানার। এরপর তাদের সঙ্গে ঠিক কেমন ধরনের 'বন্ধুত্ব' গড়ে ওঠে, সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
প্রায় প্রতিটি স্টোরিতেই আমজিদ খান নামের এক ব্যক্তিকে ট্যাগ করা হয়েছে। সেই ব্যক্তির সঙ্গে রানার কী সম্পর্ক রানার? তদন্তে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর দেশের নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই পাকিস্তান থেকে আগতদের ভিসা বাতিল করার ঘোষণা হয়েছে। এর পাশাপাশি সমস্ত সন্দেহভাজনদের আতস কাঁচের নিচে আনছেন গোয়েন্দা কর্তারা। এমতাবস্থায় পাকিস্তানি বন্দুকধারীদের সঙ্গে রানার বন্ধুত্ব যে গুরুতর তদন্তের বিষয়, তা বলাই বাহুল্য।