কুলদীপ সেঙ্গার উন্নাও গণধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত কলদীপ সেঙ্গারের জামিনের আদেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপির ওই প্রাক্তন বিধায়ক। তাঁদের বিরুদ্ধ চক্রান্ত হচ্ছে বলে দাবি করলেন কুলদীপ ও তাঁর মেয়ে ঐশ্বর্য।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পর কুলদীপ সেঙ্গার তাঁর মেয়ে ঐশ্বর্যের মাধ্যমে একটি বিবৃতি জারি করেন। তাঁর অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে তাঁদের কথা শোনা হয়নি। এটা মৌলিক অধিকার খণ্ডনের সমান।
বিবৃতিতে লেখা, 'আজ সুপ্রিম কোর্টে মামলার সারবস্তু নিয়ে বিতর্ক শুরুও করতে পারিনি। ভুক্তভোগী বেশ কয়েকবার তাঁর বয়ান বদলেছেন। তিনি প্রথমে জানিয়েছিলেন, ঘটনার সময় ২টো, তারপর জানান ৬টা। অবশেষে সকাল ৮টার কথা উল্লেখ করেন। মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে তাঁর বয়স ১৮ বছরের বেশি বলে জানা গেছে।'
কূলদীপের দাবি তিনি হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। কারণ তিনি দোষী নন। তাও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। 'আমাদের মর্যাদা এবং শান্তি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের কথাও শোনা হয়নি। এটা তো মৌলিক অধিকার হরণ। আমার ফোনের কল ডেটা রেকর্ডার (সিডিআর) থেকে স্পষ্ট যে, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলাম না। গত আট বছর ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছি। কিন্তু এখন মনে সবই নিরর্থক।'
এদিকে কূলদীপের মেয়ে ঐশ্বর্য দাবি করেন, অভিযোগকরিণীর কাকা ও কাকিমার সড়ক দুর্ঘটায় মৃত্যু নিয়ে যে সব খবর ছড়ানো হচ্ছে তা মিথ্যা। তিনি বলেন, 'সড়ক দুর্ঘটনা মামলা থেকে আমরা অব্যাহতি পেয়েছি। আইআইটি দিল্লি এবং সিবিআই দল তদন্ত করেছিল। তা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, ঘটনাটি দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগীর বাবা যখন হেফাজতে মারা যান, তখন আমার বাবা শহরে ছিলেন না। সেজন্য মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর দাবি না ছড়ানোর আবেদন করছি।'
দিল্লি হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করার পর আজ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। তাদের আবেদনের ভিত্তিতেই কুলদীপের জামিনে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। একই সঙ্গে কূলদীপের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে তাঁকে নোটিশ ইস্যু করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কূলদীপের বিরুদ্ধে। ঘটনা সামনে আসার পর দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। নির্যাতিতা অভিযোগ করেছিলেন, সেঙ্গারের চাপে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করছে। তাকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার প্রতিবাদে ২০১৮ সালের এপ্রিলে নির্যাতিতা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের বাইরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপরই ঘটনাটির তদন্তভার CBI-এর হাতে যায়। নাবালিকার নিরাপত্তা ও মামবাল শুনানি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য তা উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করা হয়।