যারা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর (Netaji Subhash Chandra Bose) প্রশংসা করেন তাঁরা তাঁদের রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত কর্মে নেতাজির মূল্যবোধকে মেনে চলার রাখার মাধ্যমে সর্বোত্তম সম্মান করতে পারেন। রবিবার একথা বললেন নেজাতি সুভাষ চন্দ্র বসুর মেয়ে অনিতা বসু পাফ (Anita Bose Pfaff)। নেতাজির জন্মবার্ষিকীর (Netaji Subhash Chandra Bose Jayanti 2023) এক দিন আগে একটি বিবৃতিতে অনিতা আবারও জাপান থেকে নেতাজির দেহাবশেষ ভারতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
অনিতা বলেন, 'যেসব পুরুষ ও মহিলা নেতাজিকে ভালবাসেন এবং প্রশংসা করেন। তাঁরা তাঁদের রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত ক্রিয়াকলাপে নেতাজির মূল্যবোধকে বজায় রাখার মাধ্যমে সর্বোত্তম সম্মান করতে পারেন। ভারতে নেতাজির দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে। আসুন আমরা নেতাজির দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে আনি।'
আরও পড়ুন: Subhash Chandra Bose jayanti: 'স্বাধীনতার পর নেতাজিকে ভোলানোর চেষ্টা হয়েছে,' বিরোধীদের নিশানা মোদীর
অনিতা বলেন, 'নেতাজি সকল ধর্ম, বর্ণ এবং সমস্ত সামাজিক স্তরের পুরুষ ও মহিলাদের জন্য সমান অধিকার, সুযোগ এবং কর্তব্যে বিশ্বাস করতেন। এর মানে সকল সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়ন এবং মুক্তি।' যদিও অনিতা দাবি করেছেন যে ব্যক্তি হিসেবে নেতাজি ছিলেন একজন ধার্মিক। অনিতার কথায়, 'তবে তিনি স্বাধীন ভারতকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়তে চেয়েছিলেন, যেখানে সমস্ত ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার সঙ্গে একসঙ্গে বসবাস করবে। নেতাজি সমাজতন্ত্রের দ্বারা অনুপ্রাণিত একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন, যিনি ভারতকে একটি আধুনিক, সমাজতান্ত্রিক বা আজকের পরিভাষায় সামাজিক-গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে সকলের মঙ্গলের জন্য সমান সুযোগ রয়েছে।'
ভারতকে স্বাধীন করতে জার্মানির হিটলারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন নেতাজি। এ নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। এই বিষয়ে নেতাজি কন্যা বলেছেন, 'ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রামের লড়াইয়ে ফ্যাসিস্ট দেশগুলির সহযোগিতা এবং সমর্থন চাইতে বাধ্য হতে দেখেছিলেন নেতাজি। ওই দেশগুলি নেতাজির আদর্শ এবং তাঁর রাজনৈতিক এজেন্ডা জানত না। সেই সময়ে তারাই একমাত্র দেশ ছিল যারা একটি সাধারণ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এই সংগ্রামকে সমর্থন করতে ইচ্ছুক ছিল।'
অনিতা আবারও স্পষ্ট জানিয়েছেন যে ৭৭ বছরেরও বেশি সময় আগে নেতাজি বিদেশের মাটিতে মারা গিয়েছিলেন এবং তাঁর দেহাবশেষ এখনও বিদেশের মাটিতেই রয়েছে। তবুও দেশবাসী এবং দেশের মেয়েরা তাঁকে ভুলে যাননি।'
নেতাজির মৃত্যু রহস্যের মধ্যে রয়ে গিয়েছে কয়েক দশক ধরে। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইওয়ানে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান নেতাজি। নেতাজির মৃত্যু রহস্যে গঠিক দুটি কমিশন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে নেতাজি তাইপেইতে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন। যদিও বিচারপতি এম কে মুখার্জীর নেতৃত্বে তৃতীয় তদন্ত কমিশন এই দাবিকে খারিজ করে দিয়েছিল। কমিশন জানিয়েছিল যে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্টের পরেও নেতাজি বেঁচে ছিলেন।