একটি-দু'টি নয়। একেবারে সাতটি গাড়ি। তাও আবার যে-সে গাড়ি নয়। BMW 330Li সিরিজের সিডান। Lokpal অফিসের এমনই এক টেন্ডার ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভারতের স্বায়ত্তশাসিত সত্তা লোকপাল। এর মূল কাজ হল দূর্নীতি দমন। এহেন সত্তার এত দামি গাড়ি কেনার টেন্ডারেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। লোকপাল দফতরে এত দামি গাড়ির প্রয়োজন কীসের? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে BMW র গাড়িগুলি কেনা হবে। অর্থাৎ, যে কেউ বিড জমা দিতে পারেন।
এক-একটি গাড়ির দামই ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি
সূত্রের খবর, সাতটি গাড়ির জন্য খরচ পড়বে প্রায় ৫ কোটি টাকা। BMW র এই লং হুইল বেসের গাড়িগুলি ভীষণ আরামদায়ক। বড় শিল্পপতি, ব্যবসায়ী বা সেলেবরা সাধারণত এই গাড়ি চড়েন। দাম ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি। অফিসিয়াল কাজে এহেন বিলাসবহুল গাড়ির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
টেন্ডারে বলা হয়েছে, শুধু গাড়ি দিলেই হবে না, BMW থেকে লোকপালের চালক ও কর্মীদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে হবে।
লোকপাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই গাড়িগুলি প্রশাসনিক ও অফিসিয়াল প্রয়োজনের জন্যই কেনা হচ্ছে।
বিরোধীরা এই টেন্ডারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁদের মতে, অফিসিয়াল কাজের জন্য একটু ভাল গাড়ি অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু সেখানেও হোন্ডা সিটি বা স্করপিওর মতো একটু ভাল গাড়ি নিলেই যথেষ্ট। সেখানে BMW র মতো এত দামী গাড়ি কেন প্রয়োজন? প্রশ্ন তুলছেন কংগ্রেস নেতারা। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থার এত বিলাসবহুল গাড়ি কেন প্রয়োজন তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের ছেলে বলছেন, 'লোকপাল তো কার্যত নিষ্ক্রিয় সংস্থা। এত বছরেও কোনও বড় দুর্নীতি মামলার সমাধান করেনি। তারপরেও এমন দামী গাড়ি কেনার মানেটা কী?” তাঁর কটাক্ষ, 'লোকপাল এখন শুধু অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জায়গা হয়ে গিয়েছে। এই সংস্থাটাই তুলে দেওয়া উচিত।'
তেলঙ্গানার কংগ্রেস নেতা সামা রাম মোহন রেড্ডিও তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, 'যে সংস্থা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বে বলে তৈরি হয়েছিল, তারাই এখন ৫ কোটি টাকার বিএমডব্লিউ কিনছে। গত ১১ বছরে লোকপাল একটিও দুর্নীতি মামলাক সমাধান করতে পারেনি।'
রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা যদি এমন বিলাসবহুল গাড়ি কেনে, তাহলে সাধারণ মানুষের মনে তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
এই তুমুল বিতর্কের পর লোকপাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিদ্ধান্তের পক্ষে কী যুক্তি দেয়, এখন সেটাই দেখার।