৮ বছরের শিশুর কোলে ২ বছরের ভাইয়ের মৃতদেহ। আর তাদের বাবা মৃত ছেলের দেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যন্স খুঁজছেন। শনিবার এমনই মর্মান্তিক দৃশ্য ধরা পড়ল মধ্যপ্রদেশের মোরেনায়। রাস্তার পাশে শিশুটিকে ভাইয়ের দেহ নিয়ে বসে থাকতে দেখে ভিড় জমে যায়। এরপর আধিকারিকদের কানেও পৌঁছায় বিষয়টি।
জানা গিয়েছে, পূজারাম জাটভ নামে ওই ব্যক্তির দুই বছরের ছেলে রাজার শরীর হঠাৎই খারাপ হয়। প্রথমে বাড়িতেই ছেলেকে সুস্থ করার চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হলে ছেলেকে মোরেনা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। বড় ছেলে গুলশনকেও সঙ্গে করে নিয়ে যান পূজারাম। হাসপাতালে মৃত্যু হয় রাজার। অসহায় পূজারাম ছেলের দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আবেদন জানান। কিন্তু তাঁর আবেদনে সাড়া দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর নিরুপায় হয়ে সন্তানের দেহ নিয়ে রাস্তায় এসে বসেন পূজারাম।
ভাড়া দেওয়ার টাকা ছিল না
জানা গিয়েছে, ছেলের দেহ অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত টাকা ছিল না পূজারামের কাছে। এরপর আর কোনও উপায় না দেখে, বড় ছেলের কাছে ছোট ছেলের দেহ রেখে গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন পূজারাম।
রাস্তায় ভাইয়ের দেহ আগলে গুলশন
পূজারামের বড় ছেলে গুলশান তার মৃত ভাইয়ের দেহ কোলে নিয়ে বাবার ফেরার আশায় আধাঘণ্টা সেখানেই বসে ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে এবং চালককে পূজারামের বাড়িতে পাঠায়।
'অ্যাম্বুলেন্সের জন্য টাকা দিতে হবে'
পূজারাম জাটভ আজতককে বলেন, "ছেলেদের মা বাড়িতে ছিল না। আমি একজন গরিব মানুষ এবং আমি জানি না আমার সন্তান কী খেয়েছে। আমি ডাক্তারকে দেখালে তিনি আমাকে ইনো এবং হিং দেন। আমি থেলেকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়নি। হাসপাতাল থেকে আমাকে অ্যাম্বুলেন্সের টাকা দিতে বলা হয়।" এ বিষয়ে মোরেনার সিভিল সার্জন বিনোদ গুপ্তা বলেন, "আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু যতক্ষণে গাড়ি এসেছে ততক্ষণে মৃত শিশুটির বাবা চলে গিয়েছিলেন।"
আরও পড়ুন - রোজ খান ১টি অ্যাভোকাডো; বাড়বে না ওজন থাকবে না কোলেস্টেরল-সমস্যাও