ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে বিরোধ সোমবার হিংসার মোড় নেয়। সোমবার রাতে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের মহালে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। মহালের পর গভীর রাতে হিংসা ছড়িয়ে পরে হাঁসপুরিতেও। দোকানপাট ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় একদল মানুষ। ব্যাপক পাথর ছোড়াছুড়ি হয়। অশান্তি আরও ছড়িয়ে পড়ার আগে এলাকায় কার্ফু জারি করা হয়।
কীভাবে নাগপুর হিংসার সূত্রপাত?
প্রথম অশান্তির ঘটনা ঘটে নাগপুরের মহালে। প্রচুর মানুষ আহত হয়। এর মধ্যে পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। উত্তেজিত জনতা ২৫টিরও বেশি বাইক ও তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এখনও পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬৫ জনকে আটক করা হয়। ২৫ থেকে ৩০ জন পুলিশ আহত হয়েছে।
কাদের মধ্যে ছড়া অশান্তি?
নাগপুরের সম্ভাজি নগরে ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে বিরোধের মধ্যে এই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এই সমাধিটি ভেঙে ফেলার দাবি জানায়। উভয় গোষ্ঠী সোমবার সকালে নাগপুরেও প্রতিবাদ করতে শুরু করে। কয়েক ঘণ্টা পরে তা অশান্তির রূপ নেয়।
সোমবার সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ মহাল এলাকার চিটনিস পার্কের কাছে প্রথম হিংসা শুরু হয়। দুষ্কৃতীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। পুলিশ জানিয়েছে, এই এলাকাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একের পর এক গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজনের বাড়িতেও পাথর ছোড়া হয়। এরপর রাত সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ওল্ড ভান্ডারা রোডের কাছে হাঁসপুরী এলাকায় আরেকটি সংঘর্ষ হয়। উত্তেজিত জনতা বহু গাড়ি পুড়িয়ে দেয়।
নাগপুর পুলিশ বলছে, গুজবের কারণে সংঘর্ষ শুরু হয়। নাগপুর পুলিশের ডিসিপি (ট্রাফিক) অর্চিত চন্দকও জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে পাথর ছোড়া হয়েছিল, তাই শক্তি প্রয়োগ করে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয়েছে।
ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে কী বিতর্ক রয়েছে?
অভিনেতা ভিকি কৌশলের ছবি 'ছাবা' কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছিল। তার পর থেকেই ঔরঙ্গজেব ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশও কয়েকদিন আগে ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর কথা বলেছিলেন। বিতর্ক আরও বেড়ে যায় যখন সমাজবাদী পার্টির নেতা আবু আজমি ঔরঙ্গজেবকে একজন ভালো শাসক হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি দাবি করেন, ঔরঙ্গজেব নিষ্ঠুর ছিলেন না। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ঔরঙ্গজেবের ভুল চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। এরপর থেকে ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবি জোরালো হয়। মাত্র একদিন আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল হুমকি দেয় সরকার যদি ঔরঙ্গজেবের সমাধি না সরায়, তাহলে বাবরির পরিণতি পুনরাবৃত্তি হবে।