আত্মঘাতী ডাক্তার (বাঁ দিকে), তালুতে লেখা সুইসাইড নোট (ডান দিকে)মহারাষ্ট্রের সাতারায় হাতের তালুতে পুলিশ অফিসারের নাম লিখে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আত্মঘাতী হয়েছিলেন সরকারি চিকিৎসক। সেই ঘটনায় গ্রেফতার এক অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি প্রশান্ত বাঙ্কার মহিলা চিকিৎসকের বাড়িওয়ালার ছেলে। তাঁর নামও হাতের তালুতে লিখে রেখেছিলেন নির্যাতিতা। এখনও অধরা পুলিশ অফিসার গোপাল বাদানে। তবে কেবলমাত্র পুলিশ নয়, এই ঘটনায় এক সাংসদও জড়িত বলে সূত্রের খবর।
২৮ বছরের ওই তরুণী সরকারি চিকিৎসক বিড় জেলার সাতারার একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে একটি হোটেলের রুমে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। হাতের তালুতে লেখা সুইসাইড নোটে তিনি SI গোপাল বাদানের বিরুদ্ধে গত ৫ মাসে তাঁকে ৪ বার ধর্ষণ করার কথা লিখেছেন। একইসঙ্গে বাড়িওয়ালার ছেলের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের কথা লিখেছেন। হাতের তালুর ওই লেখার ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হচ্ছে। ময়নাতদন্তও সম্পন্ন হয়েছে বলে খবর।
নির্যাতিতা চিকিৎসকের এক তুতো ভাইয়ের অভিযোগ, মানসিক চাপ দিয়ে মহিলা চিকিৎসককে দিয়ে ভুয়ো ময়নাতদন্ত রিপোর্ট লেখানো হত। নেপথ্যে ছিল রাজনৈতিক চাপ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বদলে দেওয়া, অভিযুক্ত ধৃত ব্যক্তিকে হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য আনলে, সেই রিপোর্ট পাল্টে ফেলার মতো কাজ করানো হত ওই মহিলাকে দিয়ে।
সাতারা পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে এই দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রে অপরাধে অভিযুক্ত ধৃত ব্যক্তিকে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য আনা হলে ইচ্ছাকৃত অসুস্থ হিসেবে লিখিয়ে নেওয়া হত মহিলা ডাক্তারকে দিয়ে। সূত্রের খবর, ৩ থেকে ৪ বার রাজনৈতিক চাপের মুখে এমন ভাবেই নতি স্বীকার করতে হয়েছে নির্যাতিতাকে। এরপরই তিনি জেলা মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে অভিযোগ করেন। জবাবদিহি চায় কাউন্সিল।
নির্যাতিতা অভিযোগ করেছিলেন, এক সাংসদের কাছ থেকে হুমকি ফোন পেয়েছিলে তিনি। যিনি তাঁকে মেডিক্যাল রিপোর্ট বদল করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। যদিও সাংসদের নাম উল্লেখ করেননি মহিলা ডাক্তার। জুন মাসে গোটা ঘটনা জানিয়ে উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারের দ্বারস্থ হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ তুতো ভাইয়ের।