দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার এক্স হ্যান্ডলে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির নিন্দায় সরব হলেন মমতা। কেজরির স্ত্রী সুনিতার সঙ্গেও কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা লিখেছেন, 'এটা গণতন্ত্রণের উপর নির্মম আঘাত।' আদর্শ আচরণবিধি লাগু হওয়ার পর বিরোধী নেতাদের গ্রেফতারি নিয়ে শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'র প্রতিনিধিরা বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। প্রতিনিধিদলে থাকবেন তৃণমূলের ডেরেক ও'ব্রায়েন এবং নাদিমুল হক।
এক্স হ্যান্ডলে মমতা লিখেছেন, 'অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সুনীতার সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেছি। পাশে থাকার বার্তা দিয়েছি।' এরপরই মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন যে, বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের নিশানা করা হচ্ছে। অথচ, সিবিআই-ইডির তদন্তে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা গণতন্ত্রের উপর নির্মম আঘাত।
লোকসভা নির্বাচনের আগে আবগারি দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় কেজরিওয়ালকে। প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন আম আদমি পার্টির নেতা-কর্মীরা। কলকাতাতেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আপ কর্মীরা।
বস্তুত, ইডি, সিবিআইয়ের 'অপব্যবহার'-এর অভিযোগ নিয়ে প্রথম থেকেই সরব মমতা। বাংলাতেও তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী ইডি-সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। ২০২২ সালে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে গ্রেফতার হন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হয়েছেন বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহা। আবার গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। কয়লা পাচার মামলায় একাধিক বার ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুদিন আগে, গরু পাচার মামলায় তৃণমূলের তারকা সাংসদ দেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। অন্য দিকে, মমতা যেদিন কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে সরব হলেন, সেদিন সকালে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপের বাড়িতে হানা দিয়েছে আয়কর দফতর। এই আবহে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে মমতার এহেন প্রতিবাদ আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে।