
শীত এলেই বরফের স্বপ্নে মজে ওঠেন পর্যটকরা। তুষারপাত, স্কিইং, স্লেজিংয়ের টানেই প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ পাড়ি দেন হিমাচল প্রদেশের মানালিতে। কিন্তু চলতি ডিসেম্বর মাসে সেখানে গিয়ে অনেক পর্যটকের স্বপ্ন অপূর্ণ, তা একটি ভাইরাল ভিডিওতেই স্পষ্ট।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মানালির একটি তথাকথিত ‘স্নো পয়েন্ট’-এ মাত্র কয়েক মিটার জুড়ে সামান্য বরফ ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। অথচ তার চারপাশের এলাকা সম্পূর্ণ শুষ্ক, পাথুরে এবং বরফহীন। ভিডিওটি রেকর্ড করা এক পর্যটকের অভিযোগ, স্থানীয় গাইডরা পর্যটকদের বিভ্রান্ত করে এই জায়গাটিকেই ‘তুষারপাতের এলাকা’ বলে দেখাচ্ছেন।
পর্যটকের দাবি, ওই বরফ প্রাকৃতিক নয়, বরং অন্য জায়গা থেকে এনে সেখানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এটা পুরোপুরি প্রতারণা। স্কিইংয়ের নাম করে মানুষকে এখানে আনা হচ্ছে।” সীমিত ওই বরফের উপর পর্যটকদের ছবি তুলতে ও সামান্য স্কিইং করতে দেখা গেলেও আশেপাশে প্রকৃত তুষারপাতের কোনও চিহ্নই নেই।
ভিডিওটি ভাইরাল হতেই নেটদুনিয়ায় শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। কেউ রসিকতা করে লেখেন, 'আমার ফ্রিজে এর চেয়েও বেশি বরফ আছে।' আরেকজন ব্যঙ্গ করে মন্তব্য করেন, 'গ্রিন স্ক্রিন ব্যবহার করলেই পারত, বাকিটা এডিটে যোগ করে দিত।' কেউ কেউ আবার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বুঝে তাঁরা কোনও অ্যাক্টিভিটিতে অংশ নেননি এবং টাকা ফেরত পেয়েছেন।
এদিকে, এমন একটি নয়, আরও একটি অনুরূপ ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে, যেখানে একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন পর্যটকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানালিতে প্রকৃত তুষারপাত উপভোগ করার জন্য সঠিক সময় বেছে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সাধারণত জানুয়ারির শেষ দিক থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত মানালি ও সংলগ্ন এলাকায় একটানা তুষারপাত হয়। ডিসেম্বর মাসে আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে অনেক নিম্নাঞ্চলেই বরফ নাও থাকতে পারে।
পর্যটন বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার রিল দেখে নয়, ভ্রমণের আগে আবহাওয়ার আপডেট, তুষারপাতের রিপোর্ট এবং স্থানীয় পরিস্থিতি ভালোভাবে যাচাই করেই পাহাড় সফরের পরিকল্পনা করা উচিত। নইলে স্বপ্নের বরফযাত্রা যে ‘নকল তুষারেই’ শেষ হতে পারে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।