মনিপুরের পরিস্থিতি আরও একবার খারাপ হতে দেখা যাচ্ছে। মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে জড়িত নিখোঁজ ছাত্রীর হত্যার খবর সামনে আসার পরে আরও একবার ফের রাজ্যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উগ্র বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে বৃহস্পতিবার একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ হয়। এরই মধ্যে একদল জনতা রাগে উন্মত্ত হয়ে ইম্ফলে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এর পৈত্রিক বাড়িতে হামলা করার চেষ্টা করে।
ইম্ফলের পুরনো হেনগিং এলাকায় বড় সংখ্যায় বিক্ষোভকারীরা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের আবাসের দিকে মিছিল করে এগোতে থাকে। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের আটকে দেয়। এক পুলিশ আধিকারি জানিয়েছেন যে ইমফলের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের পৈত্রিক বাড়িতে হামলা করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীরা বাড়ির প্রায় একশো মিটার আগেই বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয়।
মণিপুরের বিক্ষোভের পরে বিজেপি অফিসে আগুন
এর একদিন আগে থওবল জেলায় উগ্র বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়। সেই সময় বিক্ষোভকারীরা মন্ডল বিজেপি কার্যালয়ে পৌঁছে যায় এবং তার গেট ভেঙে ফেলে। এরপরে তারা জানালা ভাঙে এবং আগুন লাগিয়ে দেয়। যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সেখান থেকে হটিয়ে দেয়।
এটা প্রথমবার নয় যখন জাতীয় সমস্যার মধ্যে বিজেপি দফতরে হামলা হয়। এটা প্রথমে জুন মাসে থওবল জেলাতে তিনটি বিজেপি দপ্তরে বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর করে। এর মধ্যে কার্যালয়ের গেট, জানলা এবং অন্যান্য অংশ ভাঙচুর করে এবং এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ির কাঁচও ভেঙে দেয়।
নিখোঁজ ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাটি কি?
৬ জুলাই নিখোঁজ এক ছাত্রীর হত্যার বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকেরা বিক্ষোভ করে। এরই মধ্যে স্থানীয় বিক্ষোভকারীদের এবং এর নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে সংঘর্ষ শুরু হয়। ভিড়কে নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে। এই ঘটনাতে ৪৫ জন জখম হয়েছেন। যার মধ্যে বেশিরভাগ ছাত্র। দুই ছাত্রের হত্যার মামলার ঘটনা তদন্ত সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। সিবিআই নির্দেশক অজয় ভাটনগর নিজেদের টিমের সঙ্গে বুধবার ইম্ফল পৌঁছে গিয়েছেন। এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং লাগাতার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং সুরক্ষা কর্মীদের সতর্ক রাখা হয়েছে।
দুই ছাত্রকে অপহরণ ও হত্যার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার থেকেই রাজধানী ইম্ফলে ছাত্র সংগঠনগুলি বড় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। অনলাইনে পড়ুয়াদের মৃতদেহের ভিডিও প্রকাশের পর মঙ্গলবার নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের (আরএএফ) সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, অন্তত ৪৫ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়। তারপরই ওই এলাকায় পুলিশ, সিআরপিএফ এবং আরএএফ কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেছেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ই অপরাধীদের ধরতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। দুই যুবকের খুনের মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।