বৈবাহিক ধর্ষণ আইনি নয় বরং একটি সামাজিক সমস্যা। যে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য বৃহত্তর অংশের সঙ্গে আলোচনার দরকার। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এই জবাব দিল কেন্দ্রীয় সরকার। তারা এও জানাল,বর্তমান আইনে নারীদের জন্য পর্যাপ্ত বিধান রয়েছে। বিবাহ পারস্পরিক দায়িত্ববোধের প্রতিষ্ঠান।
কেন্দ্রের যুক্তি, ভারতে বিবাহকে পারস্পরিক দায়বদ্ধতার একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পরস্পরকে প্রতিশ্রুতি দেয় নবদম্পতি। বিবাহের মধ্যে মহিলাদের সম্মতির বিষয়টি রয়েছে। কিন্তু তা ভাঙা হলে শান্তির ব্যবস্থাও আলাদা। বৈবাহিক ধর্ষণের শিকারদের জন্য অন্যান্য আইনেও পর্যাপ্ত প্রতিকার রয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ (২) ধারার 'ব্যতিক্রম' বাতিল করা হলে বিবাহের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে,এই সমস্যাটি আইনি থেকে বেশি সামাজিক ব্যাধি, যা সমাজে সরাসরি প্রভাব ফেলে। বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্তে সুপ্রিম কোর্ট তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে একমাত্র সরকার।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ (২) ধারায় বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে যে গণ্য করা হয়নি, তার বৈধতা নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে দুই বিচারপতি ভিন্নমত দিয়েছিলেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় শীর্ষ আদালতে। গত বছর ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ৩৭৫ (২) ধারায় স্ত্রীকে ধর্ষণ করার বিষয়টি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়নি। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মত জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
রুথ মনোরমা-সহ আবেদনকারীরা যুক্তি দিয়েছেন, ৩৭৫ (২) ভারতীয় দণ্ডবিধিতে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়নি। যা যৌন মিলনে কোনও মহিলার অনিচ্ছা ও নিজের শরীরের উপর অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি রাজীব শাকধর এই বিধানটিকে অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দিয়েছিলেন। আর এক বিচারপতি সি হরি শঙ্কর এটিকে বহাল রেখেছিলেন। জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্ট কর্ণাটক হাইকোর্টের ২৩ মার্চের সিদ্ধান্তও স্থগিত রাখে। স্ত্রীকে ধর্ষণ ও জোর করে যৌন সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল স্বামীর বিরুদ্ধে। আইন অনুযায়ী সেই অভিযোগ খারিজ করাই উচিত ছিল। কিন্তু হাইকোর্ট তা করেনি।